সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিষেকেই বাজিমাত। তবে তাঁর ক্রিকেটীয় উত্থান এত সহজ ছিল না। ২০১৮ সালে বাংলার হয়ে প্রথম খেলেন। তবে শুধু অধ্যাবসায়ের উপর ভর করে কয়েক বছরের ব্যবধানেই টিম ইন্ডিয়ার (Team India) জার্সি গায়ে চাপালেন। টেস্টে অভিষেক ঘটালেন আকাশ দীপ (Akash Deep)। রাঁচির জেএসসিএ স্টেডিয়ামে তাঁর আগুনে পেসে শুরুতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ড (England)। এবং এমন পারফরম্যান্সের জন্য জশপ্রীত বুমরাহর (Jasprit Bumrah) প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন বাংলার পেসার। একইসঙ্গে এই সাফল্য প্রয়াত বাবাকে উৎসর্গ করলেন আকাশ।
সাংবাদিক বৈঠকে এসে আকাশ বলেন, “বুমরাহ ভাই বলেছিল, লেংথ একটু পিছনের দিকে রাখতে। সেটাই করেছি। তাতেই সাফল্য এসেছে। তাই ওঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। সাধারণত দেশের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামলে সবার মনের মধ্যে ভয় থাকে। তবে আমি চিন্তিত ছিলাম না। আসলে প্রতিটা ম্যাচই কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ ভেবে খেলতে নামি। এই ম্যাচেও সেই নীতি মেনেই খেলতে নেমেছিলাম।”
[আরও পড়ুন: স্টোকসের ‘বাজবল’ নীতিকে উড়িয়ে রুটের সেঞ্চুরি, আকাশের দাপট সামলে স্বস্তিতে ইংল্যান্ড]
দেশের প্রতিটি যুবকের মতো আকাশও টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। বিহারের গোপালগঞ্জ থেকে উঠে আসা আকাশ এবার তাঁর মায়ের সামনে টেস্টও খেলে ফেললেন। তবুও মনের ভিতরের খচখচানি আর যাচ্ছে না। আকাশ যোগ করলেন, “একই বছরে বাবা ও দাদা মারা যায়। সেখান থেকে ক্রিকেটার হয়ে ওঠার জার্নি খুব কঠিন। বাংলা দল ও সিএবি আমাকে সবসময় সাহায্য করেছে। রনজি ট্রফিতে পারফর্ম করেছি। আসলে আমার কাছে হারানোর কিছুই নেই। তবে অনেক কিছু পাওয়ার রয়েছে। আর তাই এই পারফরম্যান্স বাবাকে উৎসর্গ করলাম।”
বঙ্গপেসার ফের যোগ করেন, “রোহিত ভাই ও টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে খোলামেলা মেজাজে খেলার পরামর্শ দিয়েছিল। বলেছিল, এত দিন যেভাবে খেলে আসছি সেটাই যেন বজায় রাখি। ঘরোয়া ক্রিকেটে যেভাবে খেলে সাফল্য পেয়েছি, সেই মানসিকতা নিয়েই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নেমেছিলাম। অনেক সময় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামলে একটা চিন্তা থেকেই যায়। তবে দলের সিনিয়ররা সেটা অনুভব করতে দেননি।”
জো রুটের অপরাজিত ১০৬ রানের সুবাদে ইংল্যান্ড খেলায় ফিরে এলেও আকাশের পারফরম্যান্সকে খাটো করা যাবে না। তিনি নিয়েছেন ৭০ রানে ৩ উইকেট। তবে বিপক্ষের ব্যাটারদের চাপে রাখলেও তাঁর মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল। শুরুতেই জ্যাক ক্রলিকে আউট করে দিয়েছিলেন আকাশ। বল পিচে পড়ে সামান্য ভিতরের দিকে ঢোকে। ব্যাটে বলে হয়নি। ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক দিয়ে স্টাম্পে লাগে বল। ক্রলিকে বোল্ড করে আকাশ লাফিয়ে ওঠেন। তাঁর দিকে বাকিরা ছুটে আসেন। ঠিক তখনই নো বলের সাইরেন বাজানো হয়। তখনই বোঝা যায়, নো বল করে ফেলেছেন আকাশ। ফলে উইকেট পাননি তিনি।
সেটা মনে করে আকাশের প্রতিক্রিয়া, “নো বল করা অপরাধ। তাই খুব খারাপ লেগেছিল। বেঁচে যাওয়ার পর সিরাজকে এক ওভারে তিনটি চার ও একটি ছক্কা মেরেছিল ক্রলি। সেটা দেখে মন আরও খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রলিকে আমিই আউট করলাম।”