অর্ণব আইচ: নাবালিকা কিশোরী মেয়েকে দু’বছরের মধ্যেই দু’বার বিক্রি মায়ের। আর যৌনপল্লিতে ‘পণ্য’ হয়ে যাওয়ার পরই একের পর এক ‘খদ্দেরে’র অত্যচার সহ্য করতে পারেনি ওই কিশোরী। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুই (Death) হয় তার। এই মৃত্যুর কারণ ঘিরে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। প্রাথমিকভাবে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই ব্যাপারে মামলা দায়ের হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে লালবাজার (Lalbazar)।
পুলিশ জানিয়েছে, নারকেলডাঙার বাসিন্দা ওই মহিলা ২০২১ সালে তাঁর মেয়েকে বিয়ের টোপ দিয়ে বিহারের (Bihar) মুজফ্ফরপুরে নিয়ে যান। সেখানে একটি যৌনপল্লিতে মেয়েকে মোটা টাকায় বিক্রি করে দেন মা। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খবর পেয়ে এই ব্যাপারে নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ জানায়। পুলিশ মেয়েটিকে মুজফ্ফরপুর থেকে উদ্ধার করে কলকাতায় নিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশেই মায়ের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়।
[আরও পডুন: মোদি ক্ষমতায় ফিরলেও ২০১৯ লোকসভার তুলনায় কমবে আসন? প্রকাশ্যে সমীক্ষার রিপোর্ট]
কিন্তু মায়ের স্বভাব বদলায়নি। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে সোনাগাছির এক দালালের সঙ্গে যোগাযোগ হয় মায়ের। মা এবার কাজ দেওয়ার নাম করে উত্তর কলকাতার বড়তলার সোনাগাছি অঞ্চলের যৌনপল্লিতে নিয়ে যায় মেয়েকে। ফের চড়া দামে বিক্রি (Sell) করে দেওয়া হয় কিশোরীকে। অভিযোগ, কলকাতার এই যৌনপল্লিতেও ১৬ বছর বয়সের ওই কিশোরীর উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু হয়। তার জেরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এমনকী তার উপর শারীরিক নির্যাতন হয়। সে কোনও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়ার বদলে বাড়ির মালকিন নিজেদের লোকেদের সাহায্যে কিশোরীকে তার মায়ের বাড়ির দোরগোড়ায় রেখে দিয়ে পালায়।
[আরও পড়ুন: ‘রিভাবার জন্যই সংসার ভেঙেছে! ছেলের মুখ দেখি না’, বিস্ফোরক জাদেজার বাবা]
সেই খবর পেয়ে ফের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা মেয়েটিকে উদ্ধার করে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার মাথায় একটি আঘাতের চিহ্নও রয়েছে। চিকিৎসা চলাকালীন কিশোরীকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। কিন্তু বুধবার গভীর রাতে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু ঘিরেই রহস্য দানা বেঁধেছে। ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।