চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: স্কুল বন্ধ, পড়াশোনার নামগন্ধ নেই। বদলে গ্রীষ্মের ভরা দুপুরে চুপিসাড়ে স্টেশন চত্বরে ভিড় জমাচ্ছে কিশোরের দল। লকডাউনে আসানসোল স্টেশন চত্বরে ফিরে এসেছে পরিচিত দৃশ্য। সেখানে ফের কিশোরদের দেখা যাচ্ছে ডেনড্রাইটের নেশা করতে। লকডাউনের ফলে স্টেশন চত্বর ফাঁকা, নেই নজরদারিও। ইতিউতি কিশোররা দল বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে নেশা করছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।
আসানসোল স্টেশনে ভবঘুরে শিশু কিশোরদের আশ্রয়স্থল ছিল রেলের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘মুক্তাঙ্গন’। ট্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া নেশাড়ু শিশু ও কিশোরদের এখানে এনে রাখা হত। খাওয়াদাওয়া, লেখাপড়ার ব্যবস্থা ছিল এখানে। মাদকের নেশা ছাড়িয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আনা হত ওই শিশু ও কিশোরদের। এভাবেই চলছিল সব। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউন ফের সব ওলোটপালোট করে দিল।
[আরও পড়ুন: করোনা যোদ্ধাদের সুরক্ষায় পিপিই প্রদান, অভিনব উদ্যোগ কুলতলির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার]
লকডাউন শুরু হতেই বন্ধ হয়ে যায় স্কুল। নিয়মিত খাওয়াদাওয়া নেই। ফলে এই কিশোররা আবার ফিরে গিয়েছে তাদের পুরনো জীবনে। মুক্তাঙ্গনের আবাসিকরা বলছেন, ”যত দিন মুক্তাঙ্গন ছিল, ততদিন আমরা এখানে খাওয়াদাওয়া করতাম। ভালই ছিলাম। লকডাউনের পর থেকে আমাদের আর থাকার জায়গা নেই।” মুক্তাঙ্গনের প্রাক্তন পরামর্শদাতা শিক্ষক সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”মুক্তাঙ্গন যাঁরা পরিচালনা করতেন, এখন আর তাঁরা নেই। এখন ওটা রেলওয়ে চাইল্ডলাইন নিয়ে নিয়েছে। এখন যা করার ওরাই করছে।” আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফ কমান্ডার চন্দ্র মোহনের বক্তব্য, ”মুক্তাঙ্গন এখন নেই, ওটা এখন চাইল্ডলাইন হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করবো সংস্থার সংস্কার করার। বাচ্চাদের যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখব।” এভাবেই একে অন্যের ঘাড়ে দায় ঠেলে দিচ্ছেন। আর তারই মাঝে নেশার জোয়ারে ভাসছে শিশু-কিশোরের দল।
[আরও পড়ুন: করোনা পরীক্ষায় রাজ্যকে সাহায্য, RT-PCR যন্ত্র দিল পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়]
The post লকডাউনে ফাঁকা স্টেশন চত্বর, সুযোগ বুঝে মাদকের নেশায় বুঁদ ভবঘুরে শিশু-কিশোরের দল appeared first on Sangbad Pratidin.