সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: করোনা (Coronavirus) আবহে এলাকায় মানুষজন চরম অর্থ সংকটে। অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। তাই এবার আর বড় বাজেটের পুজো নয়। নয় কোনও থিমপুজোও। ব্যয় কমিয়ে সাবেকি প্রতিমা আর সাদামাটা মণ্ডপসজ্জাতেই কোনওরকমে পুজো সারছে থিমপুজোয় সেরার সেরা ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) নাইয়াপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো কমিটি। পরিবর্তে পুজোর চারদিন কমিটির সদস্যরা জোর দিয়েছেন সামাজিক কাজের উপর।
টানা ১৬ বছর ধরে নানা থিমের পুজো করে আসছে ডায়মন্ড হারবারের নাইয়াপাড়া সর্বজনীন পুজো কমিটি। বিগত দিনে রাজ্য ও জেলায় বহু পুরস্কারে সম্মানিত ওই পুজো এবার ১৭ তম বর্ষে পা দিল। চলতি বছরে করোনার কারণে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে ওই পুজোর উদ্যোক্তারা বাজেটে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতবার এই পুজোর বাজেট ছিল নয় লক্ষ টাকা। একধাক্কায় তা কমিয়ে করা হয়েছে চার লক্ষ টাকা। কুমোরটুলির শিল্পী দেবব্রত পালের তৈরি সাবেকিয়ানা থাকছে প্রতিমায়। থাকছে না চোখধাঁধানো আলোর সেই রোশনাইও। তবে পুজের চারদিনই চলবে সামাজিক কাজ। মোট বাজেটের প্রায় এক লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে সেই কাজেই। জানা গিয়েছে, ওই পুজো কমিটির তরফে এলাকার দুস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানো হবে। অসহায়, অনাথ খুদেদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুজোর পোশাক ও শীতবস্ত্র। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের কথা ভেবে ও ব্লাড ব্ল্যাংকের শূন্য ভাঁড়ার পূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এছাড়াও থাকছে আরও কিছু অনুষ্ঠান।
[আরও পড়ুন: ফালাকাটায় সরকারি বাস ও গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ, পথের বলি একই পরিবারের ৫]
এ বিষয়ে পুজো কমিটির সদস্য শংকর সরকার বলেন, “করোনাকালে এলাকার বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অনেকেরই সংসার চলছে টেনেটুনে। তাই এবার পুজোয় চাঁদা তোলার ক্ষেত্রেও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। চাঁদা নেওয়া হবে না সকলের কাছ থেকে। কেবল এলাকার সরকারি চাকুরে ও শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং ইচ্ছুক ব্যক্তিদের থেকেই চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘বড়সড় ষড়যন্ত্র’, মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ডে পুলিশের দিকে আঙুল তুলে CBI তদন্তের দাবি কৈলাসের]
একসময় পুজো বন্ধের কথা ভাবনায় এলেও চাঁদা দেওয়ার সামর্থ থাকা ওইসব ইচ্ছুক ব্যক্তিদের আশ্বাসেই জৌলুষহীন পুজোর মধ্যেও কীভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে পুজোর চারটে দিন আনন্দে কাটানো যায় তার নানা চিন্তাভাবনা ও আয়োজন চলছে।” তিনি আরও জানান, “রাজ্য সরকারের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে করোনা সংক্রমণ রোধে সমস্তরকম বিধিনিষেধ পালনের দিকে বিশেষ নজর দিতে হচ্ছে। এত বিধি মেনে পুজো আয়োজনে কিছুটা অসুবিধা হলেও সরকার নির্ধারিত সব নিয়মকানুনই কঠোরভাবে বলবৎ থাকবে পুজোমণ্ডপের ভিতর ও আশপাশ এলাকায়।”