সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘শহর যতই বড় হোক না কেন, বড়লোকদের বৃত্ত ছোটই থাকে!’ ডিজনি হটস্টারে সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মার্ডারের’ (The Great Indian Murder) এই সংলাপের মধ্যে গোটা সিরিজের গল্পটা যেন বলে দিয়েছেন পরিচালক তিগমাংশু ধুলিয়া। কেননা, এই সিরিজে গল্প এগিয়ে চলে রায়পুর, কলকাতা, চেন্নাই, আন্দামান, ঝাড়খন্ড, রাজস্থানের মধ্যে দিয়ে। একটা খুন আর ৬ টা শহর। সিরিজে এই শহরগুলোই একেকটা বৃত্ত। যা চরিত্রগুলোকে আকার দিতে থাকে।
প্রভাবশালী নেতার দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবসায়ী ছেলে। ঘটনাচক্রে জড়িয়ে পড়ে এক খুনের ঘটনায়। গোটা তিন বছর ধরে চলে সেই খুনের তদন্ত। ছেলেকে এই খুনের মামলা থেকে বাঁচাতে মরিয়া নেতা বাবা। লোপাট করতে থাকে একের পর এক প্রমাণ। কিনতে থাকে একের পর এক সাক্ষী। মিথ্যের জাল বুনতে বুনতে, গল্পের মোড় ঘুরতে থাকে বার বার। প্রত্যেক এপিসোডেই টুইস্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পরিচালক তিগমাংশু। কিন্তু তবুও জমল কি এই সিরিজ?
[আরও পড়ুন: মাসাইমারার জঙ্গলে প্রসেনজিতের অ্যাডভেঞ্চার, কতটা জমল সৃজিতের ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’?]
এককথায়, প্রথম এপিসোড থেকেই আগ্রহ হারিয়ে যায়। যার প্রধান কারণ, সিরিজের শ্লথগতি। ভারি ভারি অত্যধিক সংলাপ গল্পকে এগিয়ে যেতে বাধা দেয়। রাজনীতি, দুর্নীতি, ধর্মের ভণ্ডামি, বলিউড, এমনকী, নারীচেতনাকেও একসঙ্গে গল্পে নিয়ে আসেন পরিচালক। যা দুর্বল করে এই সিরিজকে।
‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মার্ডার’ সিরিজ অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট দোষে দুষ্ট। আশুতোষ রানা, পাওলি দাম, রিচা চাড্ডা, যতীন গোস্বামী, প্রতীক গান্ধী। সবাই নিজের নিজের জায়গায় একশো শতাংশ দিতে চেষ্টা করেছেন। তবে চিত্রনাট্যের বাঁধন ঢিলে হওয়ায় এত ভাল ভাল অভিনেতারাও জমাতে পারলেন না এই সিরিজ।
‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান মার্ডার’ সিরিজটি লেখক বিকাশ স্বরূপের লেখা ‘সিক্স সাসপেক্ট’ বই থেকে অনুপ্রাণিত। তবে তিগমাংশু বইকে একেবারেই অনুসরণ করেছেন। যার ফলে সিরিজ এক সময় শুধুই তথ্যভিত্তিক হয়ে পড়ে। থ্রিলারের মেজাজটা ধরে রাখতে পারে না। শেষমেশ বলতে গেলে তিগমাংশু ধুলিয়ার এই সিরিজকে ট্র্যাভেল ব্লগ হিসেবে দেখলে তবুও ভাল লাগবে। মার্ডার মিস্ট্রি হিসেবে নয়।