সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা কাল কেটে কবে আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে জীবন? নিউ নর্মালেও এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন কেউ কেউ। তাঁদের কিছুটা নিরাশ করেই এক বিজ্ঞানী জানালেন, আগামী শীতের আগে কিছুই স্বাভাবিক হওয়ার আশা তিনি করেন না। একথা যিনি বললেন, তিনি আর কেউ নন, করোনা ভ্যাকসিন (Corona vaccine) প্রস্তুতকারী বায়োএনটেকের (BioNTech) বিজ্ঞানী উগুর শাহিন। এঁর হাত ধরেই প্রতিষেধকেক ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দাবি করেছিল মার্কিন সংস্থা ফাইজার-বায়োএনটেক।
পরের গ্রীষ্মও কি করোনার কাঁটা নিয়ে কাটাতে হবে? শীত পড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কিন্তু উত্তরটা – হ্যাঁ। আগামী গ্রীষ্মেও বোঝা যাবে না, মারণ করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দাপট কতটা কমল? আদৌ তাকে বধ করতে পারল কি না প্রতিষেধক। এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে যত সংখ্যক করোনা প্রতিষেধকের কাজ চলছে, তার মধ্যে কে কতটা সফল হবে, তা তো সময়ই বলবে। কিন্তু ফাইজার-বায়োএনটেকের প্রতিষেধক তৈরির মূল কারিগর ডক্টর উগুর শাহিনের যুক্তি যথেষ্ট শক্তপোক্ত। তাঁর কথায়, প্রতিষেধক মানুষের শরীরে দেওয়ার পর তা কতটা কাজ করল, সেটা বুঝতে বুঝতেই আরেকটা শীত এসে যাবে। অর্থাৎ পরবর্তী শীতের আগে কোনওভাবেই বোঝা যাবে না, করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা কমল কি না।
[আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে অক্সফোর্ড টিকার ১০ কোটি ডোজ, ঘোষণা সেরাম কর্তার]
এ নিয়ে একেবারে নিঁখুত হিসেব দিলেন ডক্টর উগুর শাহিন। ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি প্রতিষেধক চূড়ান্ত পরীক্ষায় পাশ করে গেলে আগামী বছরের গোড়া থেকে তা বিশ্ববাসীর জন্য উৎপাদন শুরু হবে। সকলের হাতে তা পৌঁছতে পৌঁছতে এপ্রিল, অর্থাৎ তখন গ্রীষ্মের মরশুম। এরপর তিন সপ্তাহ অন্তর দুটি ধাপে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। প্রতিষেধকের প্রয়োগের পর কয়েকদিন সামান্য ব্যথা থাকবে শরীরে। ফলে তখন কিছুই বোঝা উপায় নেই। সেই কাজ সম্পূর্ণ বলে কার্যকারিতা বোঝার জন্য যে সময়টুকু দেওয়া দরকার, তার অপেক্ষা করতে করতে শীত এসে যাবে।
[আরও পড়ুন: ভারতের পাঠানো মাছে মিলল করোনা ভাইরাস! সাময়িক আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত চিনের]
তবে কি বসন্ত একেবারেই বিফলে যাবে? তা মোটেই নয়। এ বিষয়ে আবিষ্কর্তা শাহিন বলছেন, গ্রীষ্মে সংক্রমণের হার অনেক নিম্নমুখী থাকবে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপকভাবে ভ্যাকসিনেশনের কাজ চলতে পারে। এরপর শীতে ফের করোনা ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠলে, বোঝা যাবে, গ্রীষ্মের প্রতিষেধক কতটা কাজ করল। তবে একটি বিষয়ে ডক্টর শাহিন খুবই আত্মবিশ্বাসী। তাঁর কথায়, ”করোনা রোধে কতটা কার্যকর হল ভ্যাকসিন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও ভ্যাকসিনের প্রভাব যে সংক্রমণ আটকাবে, সে বিষয়ে আমি খুব নিশ্চিত।” সবমিলিয়ে বলাই যায়, করোনা পরবর্তী বিশ্বের মুখ দেখা আরও এক বছরের অপেক্ষা।