কৃষ্ণকুমার দাস: এবার জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়কে মান্যতা দিতে গঙ্গায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ রোখার দাওয়াইকেই কাজে লাগাতে চায় কলকাতা পুরসভা। আগামী বছর থেকে বিসর্জন-শোভাযাত্রার ঝক্কি এড়িয়ে ‘ত্রিধারা’ মডেলে মণ্ডপের কাছেই কৃত্রিম জলাশয়ে নিরঞ্জন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে পারবেন পুজোর উদ্যোক্তারা। প্রতিমার রঙ-ফুল-বেলপাতা ও তেল মিশে গঙ্গায় সম্ভাব্য দূষণ রুখতে নিরঞ্জন পদ্ধতিটি যে কার্যকর এবং বাস্তবমুখী তা মঙ্গলবার স্বীকার করেছেন পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
তাঁর কথায়, “কৃত্রিম জলাশয়ে প্রতিমা রেখে গঙ্গার অপরিশ্রুত জল হোসপাইপ দিয়ে ছুঁড়ে নিরঞ্জন করলে দূষণ এড়ানো যাবে। পরিবেশ আদালতের রায় মান্যতা দিয়ে পদ্ধতিটি কার্যকর করা নিয়ে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে আলোচনা হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে আগে বিশেষজ্ঞদের বিস্তারিত পরামর্শ নিতে হবে।” তবে আগামীটি বছর থেকে গঙ্গা ও কৃত্রিম জলাশয়, দুটোতেই বিসর্জনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে স্পষ্ট জানান পুরমন্ত্রী। করোনা সংক্রমণের ভয়ে এবছর গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জনে শোভাযাত্রা যেমন বন্ধ তেমনই মাস্ক ছাড়া কাউকেই এদিনও নদীর ঘাটের ধারে কাছে আসতে দেয়নি পুলিশ। বিসর্জনে আসা মানুষ থেকেও যাতে সংক্রমণ না ছড়ায় তাই দশমীর মত একাদশীর দিনও ঘাটগুলি স্যানিটাইজ করছে পুরসভা। জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায় কার্যকর নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে গঙ্গার ঘাটে এসেছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। তবে আগামী দিনে ‘ত্রিধারা মডেল’ কার্যকর করা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পরিবেশবিদের। জল ব্যবহারের জেরে বিসর্জনে নয়া কর বসতে পারে বলেও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
[আরও পড়ুন: রেশন বিলি করেও ৭ মাস ধরে কমিশন পাচ্ছেন না, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে চিঠি রেশন ডিলারদের]
যদিও গঙ্গার ঘাটে দাঁড়িয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম শহরে বিসর্জনে কর বসানো নিয়ে পরিবেশবিদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিসর্জনে কোনও ট্যাক্স দিতে হবে না। গঙ্গার অপরিশোধিত জল হোসপাইপে ব্যবহার করে পুজো মণ্ডপের কাছে সাময়িক তৈরি কৃত্রিম জলাশয়ে নিরঞ্জন হতে পারে।” এদিন দুপুর থেকেই গঙ্গার ২৮টি ঘাটে বিসর্জন পরিষেবা সরজমিনে তদারকি করেন পুরসভার অন্যতম প্রশাসক দেবাশিস কুমার।