সুব্রত বিশ্বাস: দেশজুড়ে উন্নত যাত্রী পরিষেবার লক্ষ্যে একাধিক শহরে বন্দে ভারত ট্রেন চালু করেছে রেল। কিন্তু একবারে মৌলিক যাত্রী পরিষেবার মান যে দিন দিন খারাপ হচ্ছে তারই এক টুকরো ছবি দেখা গেল শিয়ালদহ স্টেশনে। নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা ক্রমশ কমছে বলে অভিযোগ। অথচ শিয়ালদহেরই দক্ষিণ শাখায় নিয়মিত অতিরিক্ত ঝক্কি পোহাতে হবে বলে যাত্রীরা এটিভিএম মেশিন এড়িয়ে যাচ্ছেন। আর সেই মেশিন এখন পরিণত হয়েছে হনুমানের খেলার সামগ্রীতে।
জানা গিয়েছে, সোমবার থেকে শিয়ালদহ মেন কাউন্টারের ১৩ নম্বর কাউন্টারটি ইউটিআইতে পরিবর্তিত করা হয়েছে। যার ফলে যাত্রীদের স্ক্যান করে টিকিট কাটতে হচ্ছে। টিকিটের নির্ধারিত টাকা পৌঁছনোর পরই টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে। ফলে সময় বেশি লাগছে। যাত্রীদের অভিযোগ, শিয়ালদহের মতো ব্যস্ত স্টেশনে এমনীতেই মেন পাঁচটি কাউন্টার খোলায় দীর্ঘ লাইন পড়ত। এবার সেই লাইন আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলায় পুলিশি তদন্তে স্থগিতাদেশ! কেস ডায়েরি তলব হাই কোর্টের]
এদিকে টিকিট কাটার যে এটিভিএম মেশিন স্টেশনে লাগানো হয়েছে, তা এখন প্রায় অচল। যা এখন খেলার সামগ্রীতে পরিণত হয়েছে। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার এক স্টেশনের এমন ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এটিভিএম মেশিনের এই হাল কেন? রেলকর্মীদের কথায়, মেশিন ব্যবহার করতে হলে স্মার্ট কার্ড কিনে তাতে পয়সা ভরতে হয়। সেই কার্ড মেশিনের নির্ধারিত জায়গায় রাখতে হয়। কোথা থেকে কোন স্টেশন, কতজন নির্দিষ্ট জায়গায় ওকে করলে তবে টিকিট বের হবে। কার্ড থেকে টাকা কাটবে। এই ঝামেলার জন্য মেশিনটি এড়িয়ে যান যাত্রীরা। এছাড়াও বড় সমস্যা এক ধরণের রে-এর মাধ্যমে টিকিট প্রিন্ট হয়। যে প্রিন্ট দুঘণ্টার মধ্যে উড়ে যায়। ফলে যাত্রীদের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।
মেশিনগুলো এখন ঠিকায় নিতে ভেন্ডাররাও অস্বীকার করেন। এজন্য রেল অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ‘ভেসিলেটিং’-এ টিকিটের দামের তিন শতাংশ দিয়ে কাজ করায়। কিন্তু অবসরপ্রাপ্তরা ছোট স্টেশনগুলোতে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় মেশিনের দায়িত্ব নিতে চান না। ফলে এগুলো এখন হনুমানদের খেলার বস্তু হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেছেন রেলকর্তাদের একাংশ।