shono
Advertisement

বন্ধুত্ব আর ব্যর্থতার গল্প, কমেডির আড়ালে গভীর বার্তা ‘ছিছোড়ে’র

ঝরঝরে গল্প দিয়েই বাজিমাত করলেন পরিচালক। The post বন্ধুত্ব আর ব্যর্থতার গল্প, কমেডির আড়ালে গভীর বার্তা ‘ছিছোড়ে’র appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:39 PM Sep 06, 2019Updated: 02:40 PM Sep 06, 2019

বিশাখা পাল: সিনেমা মানেই একটা ভারী মেসেজ থাকবে। এমন ভেবে নেন অনেকেই। আর তা না হলে, নিছক ‘এন্টারটেনমেন্ট, এন্টারটেনমেন্ট আর এন্টারটেনমেন্ট’। সহজ কথাকে সেলুলয়েডে যে সহজভাবে বলা যায়, সহজভাবে যে পুরনো চাল ভাতে বাড়া যায়, তা ভুলে গিয়েছে অনেকেই। ‘ছিছোড়ে’ সেটাই দেখাল দর্শককে। সাফল্যকে সবাই শ্যাম্পেনের সঙ্গে উদযাপন করে। কিন্তু যারা সফল হয় না, তাদের কথা কি কেউ ভাবে? সেই ‘লুজার’দের গল্পই তুলে ধরেছে ‘ছিছোড়ে’।

Advertisement

গল্প অত্যন্ত সহজ সরল। একেবারে জলবৎ তরলং। বন্ধুদের হস্টেল জীবনের গল্প। পরিচালক নীতীশ তিওয়ারি নিজে বম্বে আইআইটির ছাত্র ছিলেন। তাই কলেজ জীবনের গল্প তুলে ধরতে তিনি তাঁর কলেজ জীবনেই ফিরে গিয়েছেন। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র অনিরুদ্ধ পাঠক ‘আপনে গাঁও মে শের’। কিন্তু যখন মুম্বই আইআইটির ক্যাম্পাসে গিয়ে পড়ল, তখন সেক্সা আর অ্যাসিডের সংস্পর্শে তাঁর সেই ধারণা ভাঙল। আইআইটির ক্যাম্পাস যেন এক অন্য দুনিয়া। এখানে প্রতিযোগিতা শুধু পরীক্ষার মার্কশিটে নয়, দুই হস্টেলের মধ্যেও চলে। স্পোর্টস চ্যাম্পিয়ানশিপ কে জিতবে, তা নিয়ে লড়াই চলে হস্টেলগুলির মধ্যে। আর এই লড়াইয়ে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে একটি হস্টেল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আর সেই হোস্টেলেই স্থান হয় অনিরুদ্ধের। শুরু হয় তার হস্টেল জীবন।

[ আরও পড়ুন: দর্শকদের মনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারল প্রভাস-শ্রদ্ধার ‘সাহো’? ]

তবে এই গল্প ফ্ল্যাশব্যাকে দেখানো হয়েছে। ছবি শুরু হয়েছে অনিরুদ্ধর ছেলে রাঘবকে নিয়ে। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ব়্যাঙ্ক না পয়ে আত্মহত্যা করে সে। কারণ, তার মনে হয় এবার থেকে সবাই তাকে ‘লুজার’ বলবে। রাঘবের মনে গেঁথে থাকা এই ধারণাকে বদলাতে গিয়েই তার হস্টেলের গল্প শোনাতে শুরু করে অনিরুদ্ধ। যদি তাদের গল্প শুনে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা কটে যায় রাঘবের। এখানেই একটু অতিনায়টকীয়তার পরিচয় মিলেছে। চিকিৎসা শাস্ত্র যেখানে বলছে, অবস্থা সংকটজনক তখন এক বাবা ছেলেকে তাদের হারজিতের গল্প শোনাতে বসবে? এও সম্ভব? এটুকু বাদ দিলে অনিরুদ্ধ আর তার বন্ধুদের গল্প বেশ ঝকঝকে। সাবলীল।

হস্টেলের ‘লুজার’ তকমা মোছাতে আদাজল খেয়ে ময়দানে নেমে পড়ে অনি (সুশান্ত সিং রাজপুত), সেক্সা (বরুণ শর্মা), অ্যাসিড (নবীন পলিশেট্টি), ডেরেক (তাহির রাজ ভাসিন), মাম্মি (তুষার পান্ডে) ও বেওড়া (সহর্ষ শুক্লা)। ছবিতে নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রতীক বব্বর। বহুদিন পর আলাদা করে নজর কাড়লেন তিনি। অ্যান্টি-হিরোর ভূমিকার জন্য তিনি নিজেকে বেশ খেটেখুটে তৈরি করেছেন। অনিরুদ্ধর প্রেমিকা ও প্রাক্তন স্ত্রী মায়ার ভূমিকায় শ্রদ্ধা কাপুরও যথাযথ।

[ আরও পড়ুন: মনুষ্যত্বের গল্প ‘গোত্র’, ফের সময়োপোযোগী ছবি নির্মাণ শিবু-নন্দিতার ]

ছবির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ চিত্রনাট্য ও সংলাপ। বিশেষ করে যখন অনিরুদ্ধরা দেখছে প্রতিদ্বন্দ্বীকে তারা হারাতে পারবে না, তখন অন্যভাবে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করে। প্রতিদ্বন্দ্বীকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে। ছবির এই জায়গাগুলো হাসিয়ে দর্শকের পেলে খিল ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এখানেই ছবির সাফল্য। সোজা সাপটা ঝরঝরে গল্প বলার জন্য কৃতীত্বের দাবিদার অবশ্যই পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার নীতীশ তিওয়ারি। ছবির অভিনয়, সিনেমাটোগ্রাফি ও আবহসংগীত ঠিকঠাক। কিন্তু সুশান্ত-সহ অন্য অভিনেতাদের মেক-আপের উপর একটু নজর দেওয়া দরকার ছিল। কারণ এই সব যুব অভিনেতাদের বয়স্কদের মেক-আপ ক্যারিকেচারের মতো লেগেছে। তবে মোটের উপর হলে গিয়ে দেখে আসা যায় ছবিটি। বিশেষত পরিচালক যেভাবে হারজিতের গল্প তুলে ধরেছেন, তা অতুলনীয়। জীবনে কোনও কিছুতে সফল না হলে জীবন যে শেষ হয়ে যায় না, তা সাবলীলভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।

The post বন্ধুত্ব আর ব্যর্থতার গল্প, কমেডির আড়ালে গভীর বার্তা ‘ছিছোড়ে’র appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার