shono
Advertisement

কাশীর এই সাধুরা বেঁচে থাকেন নরমাংস খেয়ে!

জীবনে থেকে জীবনকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে চলেন অঘোরীরা। সমাজও তাঁদের গ্রহণ করতে পারে না, তাঁরাও সমাজকে না! The post কাশীর এই সাধুরা বেঁচে থাকেন নরমাংস খেয়ে! appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:28 PM Aug 11, 2016Updated: 04:09 PM Jun 12, 2018

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণেশ্বরের পাগলা ঠাকুর বলেছিলেন, ঈশ্বরের কাছে পৌঁছবার পথ অনেকগুলো। কেউ যান সদর দরজা দিয়ে। কেউ যান খিড়কি-পথে। কেউ বা আবার বেছে নেন নালা-পথ! তন্ত্রসাধনা, বিশেষ করে সিদ্ধাই মার্গকে রামকৃষ্ণদেব অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন এই তৃতীয় শ্রেণির! যে কোনও কারণেই হোক, তন্ত্রপথে ঈশ্বর-সাধনার পদ্ধতি তাঁর মনঃপূত হয়নি!

Advertisement


আসলে, তন্ত্রসাধনার পথ এবং পদ্ধতি- দুই বড় জটিল! ভয়াবহও! সংসারবদ্ধ জীবের ভাবনা-চিন্তায় সেই পন্থা বুঝে ওঠা বেশ শক্ত। রামকৃষ্ণ যদিও সংসারবদ্ধ গৃহীর তালিকায় পড়েন না। তিনি রীতিমতো তন্ত্রসাধনা করে, তার স্বরূপ জেনে, তবেই একে নিম্নমার্গের সাধনা বলেছিলেন।
কিন্তু, সাধারণ মানুষ যতটা পারেন, তফাতেই থাকেন তন্ত্রসাধনার পথ থেকে। সে কারণেই তান্ত্রিক, বিশেষ করে অঘোরীদের সাধনপন্থা তাদের ভয়ের উদ্রেক করে!
অঘোরী? হঠাৎ করে তাঁদের প্রসঙ্গ কেন?


আসলে, কথা তো হচ্ছে তন্ত্রসাধনা নিয়ে! তন্ত্রসাধনার রীতিই সাধারণ মানুষের কাছে ভয়াবহ ঠেকে! সেই দিক থেকে দেখলে অঘোরীদের জীবনযাপন তাঁদের কাছে আরও ভয়ানক। কেন না, এই অঘোরীদের সাধনমার্গ তান্ত্রিক হলেও তা আরও চরম! মূলত কাশীবাসী এই অঘোরীরা বেঁচে থাকেন নরমাংস খেয়ে!
কারা এই অঘোরী? তাঁরা মূলত কাশীবাসী কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে চোখ রাখতে হবে অঘোর শব্দটার দিকে।
অঘোর শিবের এক নাম। অঘোরীরা তান্ত্রিক মতে শিবের উপাসনা করে থাকেন। তবে, শিবের শান্ত, সৌম্য, ধ্যানমগ্ন মূর্তি তাঁদের উপাস্য নয়। তাঁরা শিবকে পূজা করেন ভৈরব রূপে। যে রূপে শিব পৃথিবী ধ্বংস করেন, সেই রূপে।


এখন, ভৈরবের রূপ ভীতিপ্রদ বলেই অঘোরীদের জীবনযাপন এবং সাধনাও চরমপন্থী। শিবের উপাসক বলেই তাঁরা কাশীতে থাকেন। প্রথম অঘোরী-গুরু কীণারাম তাঁর আশ্রম তাই স্থাপন করেছিলেন কাশীতে। সেই থেকে কাশী হয়ে উঠেছে অঘোরীদের চারণভূমি। তবে, এঁরা খুব একটা মানুষের ভিড়ে থাকেন না।
এ ছাড়া আরও একটা কারণ রয়েছে কাশীতে থাকার। কাশীতেই রয়েছে মণিকর্ণিকা, ভারতের সব চেয়ে খোলামেলা শ্মশান। একটু রাত হলেই তাই মণিকর্ণিকায় ভিড় করেন অঘোরী সাধুরা। চিতা থেকে মাংস তুলে খান! কখনও বা অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ তুলে আনেন গঙ্গা থেকে। তার পর, তা খেয়ে পেট ভরান! তবে, শুধু নরমাংসই নয়, খাদ্য নিয়ে অঘোরীদের কোনও কিছুতেই দ্বিধা নেই। তাঁরা আবর্জনা, মানুষের বর্জ্য, পচনশীল মৃত পশুও খেয়ে থাকেন!


ভেবেই ঘৃণার উদ্রেক হচ্ছে তো? আসলে এই ঘৃণার ঊর্ধ্বে ওঠাটাই অঘোরীদের সাধনপন্থা। তাঁরা বিশ্বাস করেন, পার্থিব ইন্দ্রিয়সচেতনতা বিসর্জন দিতে না পারলে, ঘৃণা ত্যাগ করতে না পারলে প্রকৃতি এবং ঈশ্বরের সঙ্গে একাত্ম হওয়া যায় না! সেই জন্যই তাঁরা নামমাত্র বস্ত্রে লজ্জা ঢাকেন। কখনও বা উলঙ্গ হয়েই ঘুরে বেড়ান। সারা গায়ে তাঁরা মাখেন শ্মশানের চিতার ছাই। চুল কখনই কাটেন না! সারা শরীরে পরে থাকেন মড়ার হাড়ের গয়না, রুদ্রাক্ষের গয়না। কখনও কখনও জটায় জড়িয়ে রাখেন জীবন্ত সাপ। শবসাধনা এবং শবদেহের সঙ্গে মৈথুনও তাই হয়ে ওঠে তাঁদের সাধনার অঙ্গ।


পাশাপাশি, এই অঘোরীরা বশীকরণ, বাণ মারা- এইসব তুকতাকও জানেন। কেউ প্রয়োগ করেন, কেউ বা করেন না। সব চেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার, এঁরা দাবি করে থাকেন, তাঁদের তৈরি তেল ক্যানসার এবং এইডস-এর মতো দুরারোগ্য ব্যাধি পুরোপুরি সারাতে পারে! এই তেল তৈরি হয় মৃতদেহ থেকে। মৃতদেহ যখন চিতায় পোড়ে, তখন তাঁরা সংগ্রহ করেন সেই মাংসপোড়া তেল!
এভাবেই জীবনে থেকে জীবনকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে চলেন অঘোরীরা। সমাজও তাঁদের গ্রহণ করতে পারে না, তাঁরাও সমাজকে না!

The post কাশীর এই সাধুরা বেঁচে থাকেন নরমাংস খেয়ে! appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement