শম্পালী মৌলিক: অস্কারে এবার ভারতের অফিশিয়াল এন্ট্রি 'লাপাতা লেডিজ'। ইউকের তরফ থেকে আবার পাঠানো হয়েছে সাহানা গোস্বামী অভিনীত 'সন্তোষ' সিনেমাকে। দুটি ছবিই অ্যাকাডেমির সেরা বিদেশি ছবির ক্যাটাগোরিতে জায়গার জন্য লড়াই করবে। এছাড়াও রয়েছে অনন্ত পটবর্ধনের 'দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ ফ্যামিলি'। এরই মাঝে অস্কালের জেনারেল ক্যাটাগোরির জন্য লড়াই শুরু বাঙালি পরিচালক অনীক চৌধুরীর 'দ্য জেব্রাস: ডার্ক স্টার্ট' ছবির। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা সরকার, শারিব হাসমি ও ঊষা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফ্যাশন জগতে AI অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব কে কেন্দ্র করে তৈরি 'দ্য জেব্রাস'। ছবির ট্রেলার লঞ্চ হয়েছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে। অথচ এই সিনেমার জন্য প্রযোজক পাচ্ছিলেন না অনীক। জানান, কলকাতায় অনেকের দুয়ারেই ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। শেষে কেরলের প্রযোজক অখিল ও আশিক মুরলী এগিয়ে আসেন। শুরু হয় শুটিং। কলকাতার চিনেপাড়ায় শুটিং করেছেন অনীক। এখন তাঁর 'দ্য জেব্রাস'-এর লড়াই জেনারেল ক্যাটাগোরিগুলোতে। যার মধ্যে সেরা ছবি, সেরা পরিচালনা থেকে শুরু করে সেরা চিত্রনাট্য, সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রীও রয়েছে। অনীকের জানালেন, 'জেনারেল ক্যাটাগোরি বিদেশি ভাষার ছবির ক্যাটাগোরির থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।'
সেপ্টেম্বর মাসে অস্কারের কোয়ালিফায়িং রান সম্পূর্ণ করেছে 'দ্য জেব্রাস'। এবার মনোনয়নে জায়গা পাওয়ার লড়াই শুরু। তার জন্য চাই সঠিক প্রচারের পরিকল্পনা। কিন্তু এখানে লড়াই আরও কঠিন। পরিচালক জানান, প্রযোজকদের থেকে আর আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাবে না। এদিকে অস্কার ক্যাম্পেন করতে তো টাকা চাই। তা হবে কেমনে? পরিচালকের কথায়, "একটা ছবি অস্কারে যাওয়া মানে প্রচুর টাকার ব্যাপার। প্রযোজক ব্যাকআউট করেছেন। এবার কিছুটা হয়তো চাঁদা তুলে সামলাতে হবে। সরকারকে আর্জি পাঠাতে হবে। জানি না সরকার কতটা সাহায্য করবে। জানি হয়তো সরকারি সাহায্য পাব না কারণ এটা ভারত থেকে যায়নি। এবারে আমার কিছু যোগাযোগ রয়েছে। এই যেমন ভ্যারাইটি ম্যাগাজিন আমাদের ছবির প্রচারের জন্য এগিয়ে এসেছিল। স্ক্রিন ইন্টারন্যাশনালও এগিয়ে এসেছিল। সত্যি কথা বলতে আমরা সাহায্যের জন্য আমেরিকার মানুষদের উপরই বেশি ভরসা রাখছি, ভারতের মানুষদের উপর নয়। খুবই খারাপ লাগছে এটা বলতে। পরিস্থিতি এখন এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে যে আমরা আমেরিকার মানুষদের উপরই বেশি ভরসা রাখছি।"
প্রিয়াঙ্কা, শারিব, ঊষারা অস্কার প্রাপ্তি নিয়ে খুশি। জানালেন পরিচালক। জানান, আমেরিকার ডিস্ট্রিবিউটরা নিজের ভালো লাগার জায়গা থেকে প্রচার করছেন। মেলবোর্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের মীতু ভৌমিকও সাহায্য করছেন। আরও কয়েকজন অস্কার কমিটির সদস্যর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। শুরুটা হয়ে গিয়েছে। জানুয়ারি মাসে ৮ তারিখ পর্যন্ত প্রচারের সময়। সমস্ত রকম চেষ্টা করবেন বলে জানান অনীক। সাফল্য-ব্যর্থতা ব্যতিরেকে পরিচালকের কাছে এই জার্নিটা শিক্ষামূলক। তাঁর কথায়, "এটা আমি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হিসেবেই ধরছি। যেমনটা সরকারের হয়। আজ থেকে শুরু হল, আশা করছি হয়তো আগামী পাঁচ বছরে অস্কারের টপ লেভেলে থাকতে পারব। সেটা আমাকেই তৈরি করতে হবে। ঠিক যেমন গুণীত মঙ্গা করেছেন। হ্যাঁ, এখন এটা হচ্ছে। এবার পাঁচ বছরে একটা বেস তৈরি করে ফেলতে হবে।"