সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। মিসাইলের আঘাতে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা ট্যাঙ্ক ও সাজোয়াঁ গাড়ির ছবি স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে এই লড়াইয়ে রক্তাক্ত হয়েছে দুই দেশই। তবে দু’পক্ষই দাবি করছে পরিস্থিতি তাদের হাতে। ফলে সেনা মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিসংখ্যান মিলছে না। এহেন সময়ে আমেরিকা দাবি করেছে যে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার রুশ সেনার। আহত কমপক্ষে আরও ৪৫ হাজার।
মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস জানিয়েছেন, প্রায় পাঁচ মাসের যুদ্ধে বড়সড় ক্ষতি হয়েছে রাশিয়ার (Russia)। এখনও পর্যন্ত পুতিন বাহিনীর অন্তত ১৫ হাজার সেনা প্রাণ হারিয়েছে। আহত কমপক্ষে আরও ৪৫ হাজার। কলারাডোয় এসপেন সিকিউরিটি ফোরামে বার্নস বলেন, “রাশিয়ার থেকে কিছুটা কম হলেও, এই যুদ্ধে বিপুল ক্ষতি হয়েছে ইউক্রেনেরও। শুরুর দিকে কিয়েভ দখল করতে গিয়ে বোরো ধাক্কা খেয়েছে রাশিয়া। তাই এবার তারা দোনবাস অঞ্চল দখলে জোর দিচ্ছে। বিফলতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরাসরি লড়াইয়ে না জড়িয়ে দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া। এভাবে সৈন্য সংখ্যা কম থাকলেও ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করছে তারা।”
[আরও পড়ুন: ব্যাংক বাঁচাতে ট্যাঙ্ক! চিনে ফিরল তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারের স্মৃতি]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শেষবার মার্চের ২৫ তারিখ সেনা মৃত্যুর পরিসংখ্যান দিয়েছিল মস্কো। সেবার জানানো হয়েছিল, যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩৫১ রুশ সেনার। বাস্তবে সেই সংখ্যা অনেক বেশি বলেই মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা। একইভাবে, জুন কিয়েভ জানিয়েছিল তাদের ২০০ সেনার মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার উদ্বেগ জাগিয়ে রুশ বিদেশমন্ত্রি সের্গেই লাভরভ স্পষ্ট ভাষায় জানান, “রাশিয়ার সামরিক লক্ষ্য দোনবাসের চাইতেও বিস্তৃত।” তিনি আরও জানান, আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলি কিয়েভকে যতদিন দূরপাল্লার অস্ত্র জোগান দেবে ততদিন রাশিয়ার সামরিক লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়বে। অর্থাৎ, নিজেদের দখলে থাক ইউক্রেনের জমি রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ ইউক্রেনে (Ukraine) ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। কিন্তু এখনও কিয়েভ দখল করতে পারেনি তারা। লড়াইয়ে কয়েক হাজার সেনা ও বিপুল অস্ত্র খুইয়ে গত এপ্রিলে সামরিক অভিযানের প্রথম পর্বে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে মস্কো। পাশাপাশি, মারিওপোল ও দোনবাস অঞ্চলে অভিযান তীব্র করে তোলে পুতিনের বাহিনী। ইতিমধ্যে মারিওপোল দখল করে ফেলেছে রুশ ফৌজ। দোনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের শেষ ঘাঁটি সেভেরদোনেৎস্কও দখল করেছে পুতিন বাহিনী।