টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: গৃহস্থ বাড়িতে চুরি করতে গেলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তার চেয়ে সপ্তাহান্তের ছুটির ফাঁকে সরকারি দপ্তরে চুরি করাই শ্রেয় বলেই ভেবেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই অনুযায়ী সেখানে হানাও দেয়। তবে কাগজপত্রের পাহাড় সরিয়ে আলমারি নাড়াচাড়া করেও লাভ হয়নি কিছুই। পরিবর্তে দেখতে পেল চা করার সমস্ত সরঞ্জাম। হতাশ হয়ে চা বানিয়ে ফেলল চোর। গরম চায়ে গলা ভিজিয়ে পালিয়ে গেল চোরেরা। কম্পিউটার নিয়ে যায়নি তারা। তবে একেবারে শূন্য হাতে যেতে কি আর মন চায়? তাই তো ইলেকট্রিক কেটলি নিয়ে চম্পট দেয় চোরেরা। বাঁকুড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের ব্যতিক্রমী ঘটনায় কার্যত চোখ কপালে ওঠার জোগাড় প্রায় সকলের। এ কেমন চোর, এই প্রতিক্রিয়াই বেশিরভাগ মানুষের।
আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরটি বাঁকুড়ার একেবারে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। শনি এবং রবিবার ছুটি ছিল কর্মীদের। সোমবার সকালে নির্দিষ্ট সময়মতো অফিসে আসেন কর্মীরা। তাঁরা দেখেন, দরজার তালা ভাঙা। আলমারিগুলির দরজা খোলা। টেবিলের উপর লণ্ডভণ্ড হয়ে রয়েছে। এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাগজপত্র। চোর যে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি কর্মীদের।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় নোটে বদল আনা হচ্ছে না, ছবি নিয়ে জল্পনা উড়িয়ে জানাল RBI]
তবে আরও কিছু খোয়া গিয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেন কর্মীরা। তাঁরা দেখেন, কম্পিউটারের মতো মূল্যবান সামগ্রী ঠিকঠাকই রয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে ইলেকট্রিক কেটলি। এমনকী চা খাওয়ার সরঞ্জামও বেশ লণ্ডভণ্ড। চা, চিনির পরিমাণ আগের থেকে অনেকটা কমে গিয়েছে। দু’টি কৌটোর ঢাকনাও খোলা। তাঁদের অনুমান, ইলেকট্রিক কেটলিটি নিয়ে গিয়েছে চোরেরাই।
বাঁকুড়া আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, চোরেরা হয়তো ভেবেছিল আলমারিতে টাকাপয়সা পাওয়া যাবে। তবে তা না মেলায় হতাশ হয়ে যায়। ওই ঘরে বসেই চা তৈরি করেও খেয়েছে তারা। শেষমেশ ইলেকট্রিক কেটলি নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। চোরেদের এহেন ব্যতিক্রমী কাণ্ডকারখানায় সকলেই অবাক। এমন দুষ্কর্মের বিবরণ শুনেও হেসে খুন হচ্ছেন অনেকেই।