বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: ব্যবধান মাত্র ৪৮ ঘণ্টার। ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে সুর বদল কেন্দ্রের। শুক্রবার ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান বদলে কেন্দ্র জানাল, কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ রোখা সম্ভব।
গত বুধবারই এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর (PM Modi) বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা কে বিজয়রাঘবন জানিয়েছিলেন, “দেশে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ অবধারিত। তা কোনওভাবেই রোখা যাবে না।” মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই বিজয়রাঘবন বললেন, “যদি আমরা কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করি, তাহলে সব জায়গাতে বলা ভাল কোথাও করোনার তৃতীয় ঢেউ আসবে না। স্থানীয় স্তর থেকে শুরু করে রাজ্য, জেলা এবং শহরের ক্ষেত্রে নির্দেশিকা কতটা গুরুত্ব সহকারে মানা হচ্ছে তার উপরেই এটা নির্ভর করছে।”
মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে কেন কেন্দ্রর অবস্থান বদল? এ নিয়ে প্রায় সব মহল থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। এদিন বিজয়রাঘবন যা উত্তর দিয়েছেন, তাতে স্থানীয় স্তর তথা রাজ্যগুলির পদক্ষেপের উপরেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার বিষয়টি নির্ভর করছে বলেই ইঙ্গিত মিলেছে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর আসন নিয়ে টানাপোড়েন, দিল্লিতে হাজির হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও সর্বানন্দ সোনওয়াল]
দেশে বর্তমানে করোনার (Corona Virus) ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। দৈনিক সংক্রমণ থেকে শুরু করে মৃতের সংখ্যা রোজই বাড়ছে। এর মধ্যে তৃতীয় ঢেউ নিয়ে বিজয়রাঘবনের মতো ব্যক্তির মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবে দেশবাসীর আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছিল। ফলে প্রশ্ন উঠেছিল তৃতীয় ঢেউ রুখতে কেন্দ্র কী ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা নিয়েও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটা স্পষ্ট দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল কেন্দ্রের কাছে তৃতীয় ঢেউ রোখার আপাতত কোনও প্রস্তুতি নেই। তাই তৃতীয় ঢেউ নিয়ে এখনই যাতে কেন্দ্রকে সমালোচনার মুখে পড়তে না হয়, সেই কারণে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অবস্থান বদল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
শুক্রবারের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফ থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের যে সমস্ত জেলায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার তালিকা তুলে ধরা হয়। সেই তালিকায় রাজ্যের দুই জেলা উত্তর ২৪ পরগনা ও কলকাতারও নাম রয়েছে। করোনা সংক্রমণ জলবাহিত প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল ও বিজয়রাঘবন একযোগে এনিয়ে চিন্তার করার কোনও কারণ নেই বলেই আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে করোনা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ঘাটতির কথা সামনে এসেছে। টোসিলিজুমাবের মতো ওষুধ অমিল বলেই প্রশ্ন উঠেছে। তাতে করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্টেরয়ডের মতো ওষুধ প্রয়োজন থাকলেই ব্যবহার করা উচিত কারণ তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে বলেই জানিয়েছেন পল। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “ওষুধের ঘাটতি মেটাতে অনেক ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে। টোসিলিজুমাব বিদেশ থেকে আসে ঠিকই, তবে তার কমতি নেই। তবে, টোসিলিজুমাবের মতো ওষুধের ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন হলেই করা উচিত। কারণ, সব ওষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।” করোনার সিঙ্গল ডোজ টিকা এদেশে চালু হলে ভালই হবে বলেও মন্তব্য করেছেন পল। রাশিয়ার স্পুটনিক লাইট সিঙ্গল ডোজ করোনা টিকাকে আগামী দিনে ভারতে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে পলের কথায়।