সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক পৃথিবী খিদে! মহাবিশ্বে নতুন কৃষ্ণগহ্বরের (Black Hole)হদিশ পেয়ে বিস্মিত বিজ্ঞানীরা। প্রবল ক্ষুধা তার। কয়েকশো কোটি বছর ধরে ব্ল্যাক হোলটি একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে এখন তার বৃদ্ধির হার ব্যাপক। অঙ্কের হিসেবনিকেশ বলছে, একেক সেকেন্ডে ওই কৃষ্ণগহ্বরটি গিলে খাচ্ছে এক পৃথিবী সমান আয়তনের পদার্থ! এতই তার খিদে। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
সম্প্রতি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ অস্ট্রেলিয়ার (Australia) তরফে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতেই উল্লেখ, স্কাইম্যাপার সাদার্ন সার্ভে বা SMSS নামে যন্ত্রের মাধ্যমে এই ব্ল্যাক হোলটিকে দেখা গিয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে সেই প্রতিবেদনে। প্রায় ৯০০ কোটি বছরের পুরনো ব্ল্যাক হোলটির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে চমকে উঠছেন বিজ্ঞানীরা। বলছেন, তার খিদে এত বেশি যে একেক সেকেন্ডে পৃথিবীর সমান আয়তনের পদার্থকে গিলে ফেলছে!
[আরও পড়ুন: দিঘা বেড়াতে যাওয়াই কাল, উদয়পুরে সমুদ্রে স্নান করতে নেমে মৃত্যু ছাত্রের]
গবেষক দলের প্রধান ক্রিস্টোফার ওঙ্কেন জানাচ্ছেন, ”আমরা গত ৫০ বছর ধরে এই ধরনের কোনও মহাজাগতিক বস্তুরই খোঁজ করছিলাম। কিন্তু তার মাঝে এত পুরনো একটা ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেলাম আচমকাই। ব্ল্যাক হোলটি এত দ্রুত বেড়েছে, আমরা ভাবতেও পারিনি।” বিশ্লেষকদের মতে, আসলে একটি নয়, জোড়া ছায়াপথের সংঘর্ষের পর তারা জুড়ে গিয়ে এত বিশালাকার ব্ল্যাক হোল তৈরি হয়েছে। গবেষক স্যামুয়েল লাই জানাচ্ছেন, আমাদের নিজেদের ছায়াপথের যে ব্ল্যাক হোল, তার চেয়ে এটি অন্তত ৫০০ গুণ বৃহৎ। এর সীমানা দিয়ে বস্তুত কোনও কণা কিংবা আলো বেরিয়ে যেতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, ব্ল্যাক হোল নিয়ে নিত্যনতুন আবিষ্কার করছেন বিজ্ঞানীরা। গত বছর বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন মহাকাশে বিপুল সুনামি তৈরি করে ফেলতে পারে ব্ল্যাক হোল। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA জানিয়েছিল, যখন কোনও বিপুল ভরের ব্ল্যাক হোল নিজের কেন্দ্রে ঘূর্ণায়মাণ নিউক্লিয়াস গঠন করে তখন প্রচুর পরিমাণে গ্যাস তার কেন্দ্র থেকে সরে যায় মেরুর দিকে। এবং এভাবে চলতে চলতে যখন ব্ল্যাক হোলটির নিয়ন্ত্রণ পুরো বিষয়টির উপর থেকে চলে যায়, তখন তার কেন্দ্রের সেই ঘূর্ণায়মাণ নিউক্লিয়াসের চাকতি সংলগ্ন অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়ায় তৈরি হতে থাকে ঢেউ। সেই বিপুল গ্যাসীয় ঢেউ অনেকটাই দেখতে আমাদের পৃথিবীর সমুদ্রের ঢেউয়ের মতোই। এরপর সেই ঢেউ ব্ল্যাক হোলের সীমান্তের অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি তাপমাত্রার (যা সূর্যের থেকেও ১০ গুণ উত্তপ্ত হতে পারে) সংস্পর্শে এলে তা বিপুল ভাবে ছিটকে উঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে ১০ আলোকবর্ষ পর্যন্ত। সেই প্রবল অভিঘাতকে কল্পনা করাও কঠিন।