সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবুঘাট থেকে বারাণসীর গঙ্গার ঘাট, দুর্গাপুজোর দশমীতে প্রতিটা ঘাটের ছবিই একইরকম। উমার কৈলাসে ফেরার পালা। দেবীকে বরণ করে বিসর্জনের ধুম পড়ে সর্বত্র। প্রতিবারই দশমীতে তিথি মেনে বাপের বাড়ি থেকে বিদায় নেন উমা। কিন্তু এরই মধ্যে ব্যতিক্রমী একটি প্রতিমা। তাকে চেষ্টা করেও বিসর্জন দেওয়া সম্ভব হয়নি আজ পর্যন্ত। তাই গত কয়েক দশক ধরে একই স্থানে রয়ে গিয়েছে মা দুর্গার (Durga Idol) সেই প্রতিমা।
না, বাংলা নয়। এ দৃশ্য বারাণসীর (Varanasi) বাঙালি টোলার। কয়েক দশক আগে এক বাঙালি পরিবার নবরাত্রির ষষ্ঠীর দিন বাঙালি টোলায় মায়ের প্রতিমাটি প্রতিষ্ঠা করেছিল। নবরাত্রির (Navratri) শেষে দশেরায় সেই প্রতিমা বিসর্জনের তোরজোর শুরু হয়। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও মায়ের মৃণ্ময়ী প্রতিমা গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু কেন? ওই বাঙালি পরিবারের তরফে পার্থ ঘোষ জানান, যাঁরা প্রতিমাটি তোলার চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের তা অস্বাভাবিক ভারী মনে হয়েছিল। বেশ কয়েকজন মিলেও প্রতিমাকে ওই স্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরাতে পারেননি। একবার নয়, একাধিক বছর মায়ের বিসর্জনের চেষ্টা করা হলেও প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছেন সকলে।
[আরও পড়ুন: মহামারী পরিস্থিতিতে বাঁচল ঐতিহ্যটুকুই, দুই বাংলার ভাসানের বিবর্ণ ছবি ইছামতীর বুকে]
ওই বাঙালি পরিবারের সদস্য হেমন্তের কথায়, তাঁর পূর্বপুরুষ স্বপ্নে দেবী দুর্গার দর্শন পেয়েছিলেন। মা দুর্গা স্বপ্নে জানিয়েছিলেন, সেই স্থান থেকে এতটুকুও নড়বেন না তিনি। তারপর থেকে তাই আর প্রতিমা বিসর্জনের চেষ্টা করা হয়নি। সবটাই মায়ের ইচ্ছা বলে মেনে নিয়েছে বাঙালি টোলা। বছরভর মা সেখানেই থাকেন।
প্রতিবারই পুজো (Durga Puja) এলে নতুন করে শাড়ি-গয়নায় সেজে ওঠেন উমা। আচার মেনে হয় পুজো। আর প্রতি পাঁচ-ছ’বছর অন্তর মায়ের প্রতিমায় নতুন করে পড়ে রঙের প্রলেপ। প্রতিবারই নতুন করে আসে নবরাত্রি। আর বাঙালি টোলায় পূজিত হন এই ‘বিশেষ’ দেবী দুর্গা।