সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেসবুক-টুইটার বন্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবাও স্তব্ধ। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ দমছে না। মায়ানমারে (Myanmar) সেনা অভ্যুত্থানের (Military Coup) প্রতিবাদে শনিবারের পর রবিবারও ইয়াঙ্গনে হাজার হাজার মানুষ পথে নামলেন। এখনও পর্যন্ত হওয়া বিক্ষোভগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ এদিনের বিক্ষোভেই অংশ নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ইয়াঙ্গনে রবিবারের বিক্ষোভেও কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। কারওর আনা ব্যানারে লেখা ছিল “Justice for Myanmar”, কারওর ব্যানারে লেখা ছিল, ”আমরা সেনার স্বৈরতন্ত্র চাই না।” অনেকেই আবার সু কি’র দল ন্যাশনাল লিগ অব ডেমোক্রেসির লাল রংয়ের পতাকা হাতেও মিছিলে হাঁটেন। কেউ কেউ প্রতিবাদ করতে আবার ‘হাঙ্গার গেমস’ সিনেমার সেই তিন আঙুলের স্যালুটও করেন। যা কিনা গত বছর থাইল্যান্ডের বিক্ষোভকারীদের করতেও দেখা গিয়েছিল।
[আরও পড়ুন: সেনার নিশানায় প্রশাসনিক কর্তারা, মায়ানমারে হামলায় ৯ নাগরিক-সহ নিহত অন্তত ১২]
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে যেমন ছিলেন মহিলারা, তেমনই ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। কুই ফুইয়ো কৌও নামে ২০ বছর বয়সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়া বলেন, “আমি সেনা অভ্যুত্থানের ঘোরতর বিরোধী। তাতে যদি আমাকে কঠোর শাস্তি পেতে হয় তাও আমি প্রতিবাদ করব। যতদিন মা সুকিকে ছাড়া হবে না ততদিন বিক্ষোভে অংশ নেব।” ইয়ে কৌও নামে ১৮ বছর বয়সি অর্থনীতির এক পড়ুয়া বলেন, “আমরা ঠিক করেছি, শেষপর্যন্ত লড়াই করব। কারণ এই সেনা অভ্যুত্থান শেষ হলে পরবর্তী প্রজন্ম গণতন্ত্রের স্বাদ পাবে।”
উল্লেখ্য, গত বছর বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতায় ফিরেছিলেন আং সান সু কি’র (Aung San Suu Kyi) দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (NLD)। মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সু কি সরকারের। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও করেছে সামরিক ‘জুন্টা’। এরপরই ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের শাসকদল ‘ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র মুখপাত্র মায়ও নায়ান্ট জানিয়েছিলেন আচমকা কাউন্সিলর সু কি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও অন্য নেতাদের আটক করেছে সেনাবাহিনী। বলে রাখা ভাল, ২০০৮ সালে সামরিক নজরদারিতে যে সংবিধান তৈরি হয়েছে, সেখানে পার্লামেন্টে কোনও বড় আইন রুখে দেওয়ার মতো আসন সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলিও সেনার হাতে রয়েছে। ফলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেও, গণতান্ত্রিক শাসন এখনও প্রতিষ্ঠা হয়নি সে দেশে।