ধীমান রায়, কাটোয়া: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) নাম করে হুমকি চিঠি, বোমা পৌঁছল এক রেশন ডিলারের বাড়িতে। সাতসকালে এসব দেখে চূড়ান্ত আতঙ্কিত পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ওই পরিবার। মঙ্গলকোটের পালিগ্রামের বাসিন্দা জীবনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই রেশন ডিলার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। পুলিশ বোমাগুলি ও চিঠি উদ্ধার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এখনও অভিযুক্তরা অধরা। তবে গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এই ঘটনা স্রেফ অনুব্রত মণ্ডলের নাম করে ঘটানো হয়েছে। তাঁর নিজের কোনও যোগ নেই এর সঙ্গে।
জীবনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরে পালিগ্রামের বাসিন্দা এবং এই গ্রামেই তাঁর রেশন দোকান। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দরজা খুলতেই তাঁর দিদি রেখা মুখোপাধ্যায় প্রথম দেখতে পান সিঁড়ির ধাপে নামানো রয়েছে চারটি তাজা বোমা। আর একটি খোলা চিঠি (Threat Letter)। তাতে স্পষ্ট নির্দেশ, “আমাদের ছেলেরা তৈরি থাকবে। তুমি আজ রাত সাড়ে ন’টার সময় গ্রামের লোকনাথ মন্দিরে টাকা নামিয়ে রেখে আসবে। আমার ছেলেরা লাইটের আলোর সিগন্যাল দেবে।”এমনকি জীবনবাবুর উদ্দেশে এও লেখা রয়েছে, “নির্দেশ অমান্য করলে বাড়িতে ১০ কেজি গাঁজা ও বোমা গুঁজে দেওয়া হবে। তুমি যা ভালো বুঝবে, করবে।”
[আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গের পর নজরে জঙ্গলমহল, প্রশাসনিক বৈঠক করতে আজ থেকে ২ দিনের সফরে মুখ্যমন্ত্রী]
এমন চিঠির সঙ্গে চারটি তাজা বোমা দেখতে পেয়ে স্পষ্টই ভয়ে কাঁপছেন জীবনবাবু ও তাঁর পরিবার। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মঙ্গলকোট (Mangalkot) থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, “এদিনের হুমকি চিঠিই প্রথম নয়। গত বৃহস্পতিবার সকালেও এই ধরনের চিঠি বাড়ির দরজার সামনে রেখে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তাতে আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এমনকি টাকা না দিলে আমার ছেলে মেয়ের ক্ষতি করার হুমকিও দেওয়া হয়। কিন্তু ওদিন ততটা আমল দিইনি। কিন্তু এদিন বোমাগুলি রেখে যাওয়ার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই পুলিশকে জানিয়েছি।”
[আরও পড়ুন: মণীশ শুক্লা হত্যাকাণ্ডে সিআইডি’র হাতে গ্রেপ্তার ২, জোরাল ব্যক্তিগত শত্রুতায় খুনের তত্ত্ব]
পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, দুটি চিঠিরই হাতের লেখা একইরকম। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা এ কাজ করল, তাদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। পাশাপাশি ওই ডিলারের নিরাপত্তার দিকটিতেও গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। দুটি হুমকি চিঠিতেই অনুব্রত মণ্ডলের নাম করা থাকলেও ওই ডিলার-সহ স্থানীয়দের সকলেরই ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা দুষ্কৃতীদের কাজ। এ প্রসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া জানতে তাঁকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তা পাওয়া যায়নি।
ছবি: জয়ন্ত দাস।