সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভোটের (WB Polls 2021) ময়দানে ‘ফুলমনির’ মা। থুড়ি ‘ফুলমনির মাই’! মানভূঁইয়া ভাষায় ‘ফুলমনির মাই’ গানের ভিডিও এখন সুপারহিট। তাই ভোট প্রচারেও ফুলমনিকে নিয়ে এল শাসকদল তৃণমূল থেকে বিজেপি, (TMC-BJP) সকলেই। পুরুলিয়াজুড়ে দেওয়াল লিখনে ফুটে উঠেছে ‘ফুলমনির মাই’-এর কথা। তৃণমূল লিখছে, “এগো এই/ ফুলমনির মাই। এবার টিএমসিকেই চাই।” “এগো এই ফুলমনির বাপ। এবার গোটাই ঘাসফুল ছাপ।” পিছিয়ে নেই গেরুয়া শিবিরও। ফুলমনিকে ভোটের কাজে লাগিয়ে মানুষের মন জয়ে তারা সাজিয়ে তুলছে দেওয়াল। দু’পাশে পদ্ম ফুলের ছবি এঁকে বিজেপি লিখছে, “ওগো ফুলমনির মাই/ইবার বিজেপিকেই চায়।”
খানিকটা টুম্পা সোনার মতোই পুরুলিয়ায় ভোটের বাজারে চলে এসেছে, ‘ফুলমনির মাই’-এর কথা। এবার সরস্বতী পুজোয় এই গানের ভিডিও রিলিজ হয়। তারপর থেকে এই জেলার মুখে মুখে ফিরছে সেই গান, “এগো এ ফুলমনির মাই এখনও সাথ–ই হল নাই/ এগো এ ফুলমনির বাপ, টুকু লাগাছি মেকআপ/ তোরা কেন বুঝ নাই/ বাইরাছি গো বাইরাছি সিঁদুরটা লাগায়।” এই গানের ভিডিওতে মূলত দাম্পত্য কলহ, খুনসুটি ও ভালবাসা ফুটে উঠেছে। আর সেই গানই এখন পুরুলিয়ার যুব মনে গেঁথে গিয়েছে। তাই বহুল প্রচারিত বিষয়কে ভোট প্রচারে এনে বাজিমাত করতে চাইছে শাসকদল ও গেরুয়া শিবির।
[আরও পড়ুন: শরীরে সাড়ে ৩ কেজির রক্তখেকো ‘পিলে’! অপারেশন করে তরুণীকে বাঁচাল NRS]
মানবাজার ও বান্দোয়ান বিধানসভায় ‘ফুলমনির মাই’কে নিয়ে সবচেয়ে বেশি দেওয়াল লিখন চোখে পড়েছে। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মানবাজার বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যারাণী টুডু বলেন, “মানভূঁইয়া ভাষায় গানগুলি একেবারে মন ছুঁয়ে যায়। ভীষণ জনপ্রিয় হয়। ‘ফুলমনির মাই’ও ঠিক তাই। এই গানের মধ্যে তো আমার মানভূমের সংস্কৃতিই ফুটে উঠেছে। তাই জনপ্রিয় গানকে এই জেলায় আমরা ভোট প্রচারে ব্যবহার করছি।” এই বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী গৌরি সিং সর্দার বলেন, “একদিকে মানভূম সংস্কৃতি সেই সঙ্গে এই গানকে ঘিরে একটা আলাদা মজা আছে। তাই ভোটের প্রচারে এনে আমরা নজরে আসছি।”
গ্রাম বাংলায় এখনও স্বামী–স্ত্রী একে অপরের নাম ধরে ডাকেন না। পুত্র বা কন্যা সন্তানের নামকে সামনে রেখেই একে অপরকে সম্বোধন করেন। সেই বাস্তব বিষয়টি গানে উঠে আসাতেই সুপারহিট হয়েছে। তাই ওই গানকে সামনে রেখে ভোট প্রচারে নিজেদের দিকে আলো ফেরাতে চাইছে তৃণমূল-বিজেপি। তবে আদিবাসী কুড়মি সমাজের আওতায় থাকা মানভূম স্মৃতিরক্ষা কমিটির প্রধান অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “ভোট এলেই মানভূম সংস্কৃতির কথা মনে পড়ে রাজনৈতিক দলগুলির। আমাদের জবাব দিতে হবে এই জেলায় কেন আজও মানভূম সংস্কৃতি উপেক্ষিত?” সে যাই হোক, ‘ফুলমনির মাই’ গানের মতো দেওয়াল লিখনও হিট সাবেক মানভূম পুরুলিয়ায় (Purulia)।