স্টাফ রিপোর্টার, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলমহলের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালের বর্ণময় মঞ্চ থেকে শুক্রবার ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর জয় আগাম ঘোযণা করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। শুধু তাই নয়, মঞ্চের মাঝখানের বড় চেয়ার ফাঁকা রেখে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) নয়াগ্রামে বলেন, ‘‘এই আসন ফাঁকা থাকবে, পরের বছরের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে এখানেই বসবেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়ী ঝাড়গ্রামের সাংসদ।’’
গত লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Election) এই সংসদীয় আসন জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু বিধানসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম মহকুমার চারটি আসনেই বিপুল ভোটে জয়ী হয় জোড়াফুল। এদিন বাম জমানায় মাও-তাণ্ডবের কথা ইঙ্গিত করে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘একসময় এখানের মাঠে-জঙ্গলে সকাল হলেই মৃতদেহ পড়ে থাকত। কিন্তু এখন সেখানে ক্রিকেটের টুর্নামেন্ট হচ্ছে, পড়ন্ত বিকেলে হাজার হাজার মানুষ খেলা দেখছেন। বিজেপির (BJP) প্ররোচনা উপেক্ষা করে মানুষ চারটি বিধানসভা সিটে তৃণমূলকে জিতিয়েছিল। কারণ মানুষ উন্নয়নের সঙ্গে এলাকায় নিবিড় শান্তি ও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর সেই কারণে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিটি বুথেই জোড়াফুল জয়ী হওয়ার পাশাপাশি লোকসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী ঝাড়গ্রাম সংসদীয় আসনে জিতবেই জিতবে।’’একইসঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৭৭টি সামাজিক প্রকল্প নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছাতে পরামর্শ দেন কুণাল। বলেন,‘‘এমনভাবে মানুষকে বোঝান যেন বিজেপি কোনও বুথে প্রার্থী করার লোক খুঁজে না পায়।’’ সেতু তৈরির জেরে দুই জনপদের যোগাযোগ যে বিপ্লব এনেছে এলাকায় তাও তুলে ধরেন তৃণমূল মুখপাত্র।
[আরও পড়ুন: ‘দেশের অবস্থা ভাল নয়, সন্তানদের বলেছি বিদেশে থাকতে’, লালুর দলের নেতার মন্তব্যে বিতর্ক]
জঙ্গলমহলের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানকে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন তার তথ্য তুলে ধরেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তী। স্থানীয় খেলোয়াড়দের নৈপুণ্যের তারিফ করে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাছাই খেলোয়াড়াদের নিয়ে আগামী দিনে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।’’ সভায় জঙ্গলকন্যা বনদপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘সিপিএম (CPM) সরকারি টাকা নিয়ে পার্টির তহবিল ভরাত, আর আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নানা সামাজিক প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অ্যাকাউন্ট ভরছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার, খাদ্যসাথী (Khadya Sathi), স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প আজ দেশের সেরার স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই তো বাংলার মানুষ আজ তৃণমূলের পাশে।’’
[আরও পড়ুন: যোগীরাজ্যের স্কুলে মুসলিম প্রার্থনা সংগীত, সাসপেন্ড স্কুলের প্রিন্সিপাল]
ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামের ছোট ঝরিয়া মাঠে ‘টিম অভিষেক ঝাড়গ্রাম’ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল। ‘সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক’ কাপ শীর্ষক টুর্নামেন্টের মূল উদ্যোক্তা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুমন সাউ। অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, বিধায়ক দুলাল মুর্মু, অধ্যাপক মনিকান্ত পড়িয়া, উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি কাউন্সিলর শান্তি কুন্ডু, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহসভাপতি সুদীপ রাহা প্রমুখ।