নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ভোটের ফল নিয়ে শেয়ার বাজারে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার সেবির দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃণমূলের ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সেবির ডিরেক্টর জি রামমোহন রাওয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে এদিন সকালে এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারের বাড়িতে গেলেন তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাগরিকা ঘোষ এবং সাকেত গোখলে।
জানা যাচ্ছে, সেবির দ্বারস্থ হওয়ার আগে শরদের বাড়িতে এদিন দীর্ঘ বৈঠক হয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের। তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শরদ পওয়ার, সুপ্রিয়া সুলে, বিদ্যা চৌহান এবং শিব সেনা (উদ্ধব) শিবিরের সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত। তৃণমূলের তরফে এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করা হলেও, সূত্রের খবর, সেবির অফিসে যাওয়ার আগে আন্দোলনের রণকৌশল ঠিক করা হয় এই বৈঠক থেকে। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার সেবির ডিরেক্টর জি রাম মোহন রাওয়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে তৃণমূলের তরফে আগাম চিঠি দেওয়া হলেও তাঁদের সময় দিতে রাজি হননি সেবির ডিরেক্টর। এই অবস্থায় সেবি অফিসে গেলেও ডিরেক্টরের দেখা যে পাবেন না তা বেশ বুঝতে পারছেন বিরোধী নেতৃত্বরা। সেই পরিস্থিতিতে সেবি অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও আন্দোলনের রণকৌশল ঠিক করা হয় এদিনের বৈঠকে।
[আরও পড়ুন: পান্নুন খুনের ষড়যন্ত্র! মার্কিন আদালতে নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবি নিখিলের]
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের এক্সিট পোলকে হাতিয়ার করে শেয়ার বাজারে বিপুল টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। তৃণমূলের অভিযোগ, এক্সিট পোলের মাধ্যমে শেয়ার বাজার প্রভাবিত করার যে চেষ্টা হয়েছে, তার অকাট প্রমাণ তাঁদের হাতে রয়েছে। উদাহরণ হিসাবে তৃণমূল বলছে, বিখ্যাত সংস্থা অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়ার সমীক্ষায় বাংলার এক্সিট পোলে (Exit Poll) ভ্রান্তির পরিমাণ প্রায় ১৫০ শতাংশ। যা কোনও স্বীকৃতি সংস্থার দ্বারাই করা সম্ভব নয়। তাছাড়া এই এক্সিট পোল সংস্থাগুলি বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার হয়েও সমীক্ষা করে, সেটা সরাসরি স্বার্থের সংঘাত। এই ইস্যুগুলিই সেবির সামনে তুলে ধরতে চায় তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: বইয়ে পালা করে ব্যবহৃত হবে ‘ভারত’ ও ‘ইন্ডিয়া’, শব্দ ব্যবহারে বিতর্ক নিয়ে দাবি NCERT-এর]
তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সেবির দপ্তরে যাওয়ার জন্য আগেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল উদ্ধব ঠাকরের শিব সেনা এবং শরদ পওয়ারের এনসিপিকেও। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে আমন্ত্রিতের তালিকা থেকে বাদ পড়ে কংগ্রেস। অথচ এই ইস্যুতে প্রথম সরব হতে দেখা গিয়েছিল কংগ্রেসকে। রাহুল গান্ধী দাবি করেছিলেন, “এটা ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শেয়ার বাজার দুর্নীতি।” রাহুলের সেই অভিযোগ পরে এই ইস্যু ইন্ডিয়া জোটের এজেন্ডা হয়ে দাঁড়ায়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, আপাতত কংগ্রেসের তোলা সেই ইস্যু ‘হাইজ্যাক’ করে নিয়েছে তৃণমূল। দিল্লিতে তৎপরতা বাড়াচ্ছে এরাজ্যের শাসকদল। সেই সঙ্গে বাড়ছে আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টাও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পুরোটাই হচ্ছে কংগ্রেসকে আড়ালে রেখে।