রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করা হোক। এমন দাবি ওঠার পর জঙ্গলমহলেও একই দাবি উঠতে পারে। কারণ, উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাঢ়বঙ্গও। সোমবার এহেন মন্তব্য করে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। এই মন্তব্য আইনশৃঙ্খলার অবনতির পক্ষে যথেষ্ট উসকানিমূলক, এই অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে এবার আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) থানায় দায়ের হল অভিযোগ। মঙ্গলবার বেলার দিকে এফআইআর (FIR) দায়ের করেছেন আলিপুরদুয়ারের জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি বাবলু কর। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গ’ভঙ্গে’র দাবি তোলা স্থানীয় সাংসদ জন বার্লার বিরুদ্ধেও তিনি এফআইআর করেছেন। এ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় জন বার্লার বিরুদ্ধে মোট ৭টি অভিযোগ দায়ের হল।
আলিপুরদুয়ারের যুব তৃণমূল (TMC) সভাপতি বাবুল করের বক্তব্য, ”আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা (John Barla) এবং বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ নিজেরাই ক্রিমিনাল। এদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। এমনকী যারা বাংলা ভাগকে সমর্থন জানাচ্ছেন বা ভাগ চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট দিচ্ছেন, তারাও সমানভাবে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন, সকলকে গ্রেপ্তার করতে হবে।” আলিপুরদুয়ার থানার আইসি এস প্রধান জানান, অভিযোগ গৃহীত হয়েছে। তদন্ত শুরু হবে এবং সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন থানায় অভিযোগ দায়েরের পর উত্তরবঙ্গ ভাগের বিরোধিতা জানিয়ে যুব তৃণমূলের সদস্যরা থানার বাইরে বিক্ষোভও দেখান।
[আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে বইছে ‘ভাঙনে’র হাওয়া! বার্লার দাবির সমর্থনে সুর চড়ালেন ২ বিজেপি বিধায়ক]
সোমবারই উত্তরবঙ্গ নিয়ে জন বার্লার বঞ্চনার দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেছিলেন, ”রাঢ়বঙ্গও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। এখানকার কোনও যুবকের চাকরি হয় না। এখানকার সম্পদ নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। কিন্তু উন্নয়নের লেশমাত্র নেই। এখন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি উঠতেই পারে।” তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই অভিযোগ দায়ের হল তাঁর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, জন বার্লা এবং এই দাবির সপক্ষে সরব হওয়া সকলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূলের যুব সভাপতি বাবলু কর।
[আরও পড়ুন: বন্যায় জল থইথই, শৌচকর্মের জায়গা নিয়ে চিন্তিত সুন্দরবনের বাসিন্দারা]
অন্যদিকে, জন বার্লার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দিনহাটা, আলিপুরদুয়ার, কোতোয়ালি থানা-সহ মোট ৭টি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাঁদের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করলেও বিতর্ক এড়াতে তাঁর সাফাই, বঞ্চনা হয়েছে, তাই তার কথা বলছেন সকলে। একে ‘বঙ্গভঙ্গে’র দাবি হিসেবে দেখা অনুচিত।