সৈকত মাইতি ও চঞ্চল প্রধান: দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হতেই দলের নির্দেশ পদত্যাগ করেছিলেন তমলুকের এক পঞ্চায়েত প্রধান। এর ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সাংগঠনিক ইউনিটের শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এস কে সেলিম আলি। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধানের পদে থেকে কোটি-কোটি টাকার দুর্নীতি, পাহাড় প্রমাণ সম্পত্তি ছিল তাঁর নামে। মাত্র বছর দুয়েকের মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা-সহ অন্যান্য জেলাতে ৮৩টি মূল্যবান প্লট কেনা হয়েছিল তাঁর নামে। এবার সেই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
সম্প্রতি কাঁথির সভায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের কর্মী, সমর্থকদের পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে সরাসরি তাঁকে অভিযোগ জানাতে বলেন। এরপরই ‘এক ডাকে অভিষেক’-এ ফোনে অভিযোগ জমা পড়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক সাংগঠনিক ইউনিটের শান্তিপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এস কে সেলিম আলির বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, তিনি ৬০টির বেশি বেনামি সম্পত্তির মালিক এবং ঠিকাদারিতে যুক্ত। তদন্তে প্রতিটি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেলিম আলিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। মঙ্গলবার দলের নির্দেশে সেলিম আলি পঞ্চায়েতের প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
[আরও পড়ুন: প্রেমের টানে কাকদ্বীপ থেকে মালদহ, বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের দুয়ারে দুই সন্তানের মা]
যদিও সেলিম আলির দাবি, “কোনও দুর্নীতির জন্য আমি পদত্যাগ করিনি। দলের একাধিক পদে থেকে চাপ বাড়ছিল, সে জন্য আমি এই পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। কোনওদিনই দলের পদ চিরস্থায়ী হয় না। পদ ছাড়লেও দলের সঙ্গে আছি আগামিদিনেও থাকবে।” কিন্তু এবার দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
প্রসঙ্গত, সেলিম একটা সময় সাধারণ সিপিএমের কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। এরপর রাজ্যে পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও তৃণমূলে যোগদান করেন। শুভেন্দু অধিকারীর ছত্রছায়াতে এসে এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিযোগ, শান্তিপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান পদে থেকে তিনি লাগাতার দুর্নীতি করেছেন। অভিযোগ, তৎকালীন এই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা ওরফে লালুর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে একটি ঠিকাদারি সংস্থা খোলেন। এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক মূল্যবান জমি কেনাবেচার মাধ্যমে রীতিমতো এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠেন এই দুই নেতা। বিষয়টি নজর এড়ায়নি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের। এরপরই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।