শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: প্রধান করার লোভ দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন! মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের নিমতিতার তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) অঞ্চল সভাপতি সামিউল হক এবং প্রধান মইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা মালা হালদারের স্বামী বিশ্বনাথ হালদার। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভরতি করলে বুধবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
মঙ্গলবার ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল সৃষ্টি হয় এলাকায়। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন নিমতিতা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সামিউল হক। পালটা ওই সদস্যের স্বামীকেই বিভিন্ন ভাবে আর্থিক সাহায্য করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: জীবনকৃষ্ণের মোবাইলে ১০০ অডিও ফাইল, যাচাই করতে বিধায়কের স্বরের নমুনা নেবে CBI]
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন বিশ্বনাথ হালদার। সেখানেই কার্যত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সামিউল হকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। স্ত্রী মালা হালদারকে প্রধান করার আশ্বাস দিয়ে তাঁর কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ নেওয়ার মতো বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিশ্বনাথ হালদার। সেই টাকা দেওয়ার জন্য স্ত্রী ও পরিবারের গয়না বন্ধক এবং বিক্রি করতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আর এসব কিছুর পিছনে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সামিউল হক, বর্তমান প্রধান মইদুল ইসলাম, দুই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা আজফারুল হক এবং তাজামুল হক ছাড়াও আরও দু’জন জড়িত রয়েছে বলেই দাবি করেছিলেন বিশ্বনাথ।
এত কিছু করার পরেও তাঁকে প্রধান না করায় মানসিক অবসাদে এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন বলেই বিষ খেয়ে নেন ওই তৃণমূল নেতা। বিষ খাওয়ার পরেই তড়িঘড়ি অসুস্থ তৃণমূল নেতাকে প্রথমে অনুপনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেই এদিন সকালে মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার। মৃত্যুর ঘটনায় সামসেরগঞ্জের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। দলেরই নেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করে যেভাবে তৃণমূলেরই এক নেতা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা ঘিরে শোরগোল পড়েছে। এদিকে ভিডিও বার্তা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেও সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি সামিউল হক।