স্টাফ রিপোর্টার: শহিদ স্মরণ কর্মসূচি ঘিরে তৃণমূল-বিজেপির টানাপোড়েনের মধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয় ঘিরে বুধবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এদিন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তর অভিযোগ করেন, ‘‘নন্দীগ্রামের বিভিন্ন পল্লি থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে থাকা শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) কনভয় নিয়ে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, ওই গাড়িতে করে বাইরে থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ও বেআইনি অস্ত্র ঢুকছে নন্দীগ্রামে। বিজেপিতে যে ধস শুরু হয়েছে তা আটকাতেই বাইরে থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে এসে পাড়ায় পাড়ায় ছড়াতে শুরু করেছেন বিরোধী দলনেতা। টাকা ছড়িয়ে দল ছেড়ে যেতে চাওয়া কর্মীদের আটকানোর চেষ্টা করছে লোডশেডিংয়ে জেতা বিজেপি নেতা।’’ এরপরই তৃণমূল মুখপাত্র দাবি করেছেন, ‘‘পুলিশকে বলব, নাকা চেকিংয়ে শুভেন্দুর কনভয় আটকে মাঝে গাড়িতে তল্লাশি চালানো হোক। তা হলেই প্রমাণ হয়ে যাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে থাকা কনভয়ের সুবিধা নিয়ে কীভাবে বেআইনি পাচারচক্র চালাচ্ছে শুভেন্দু।’’
দিনভর নানা দলীয় বৈঠক ও জনসভার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক সামাজিক কর্মসূচিতেও যোগ দেন তৃণমূল মুখপাত্র। তবে আগের মতোই প্রতিটি সভা ও সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দুকে নানা ইস্যুতে তুলোধোনা করেছেন তিনি। বিরোধী দলনেতা এদিন রাজনীতিতে গুরুত্ব বোঝাতে অভিযোগ করেছিলেন, “তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যের ৮০ শতাংশই তাঁকে নিয়ে থাকছে।” সাংবাদিকদের কাছে বিরোধী নেতার এমন অভিযোগ শুনে সপাট জবাব দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেছেন, ‘‘ওকে শুনতে হবে কারণ, তৃণমূলে থাকার সময় জেলায় ৮০ শতাংশ পদ ও ক্ষমতা অধিকারীরা ভোগ করেছে। নিজে ও বাপ-ভাই সব লুটেপুটে খেয়েছে, তাই ওদের কুকীর্তির কথা তো শুনতেই হবে।’’
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর পর শান্তিপুরের রাসও পেতে চলেছে হেরিটেজ তকমা? মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে জল্পনা]
সকালে উত্তর কাঁথির মুকুন্দপুর বাজারে সকালে চা-চক্রে যোগ দেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বহু সাধারণ মানুষের খোলামেলা নানা প্রশ্নের উত্তর দেন। ছিলেন কাঁথি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি ও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তরুণ জানা। এরপর তিনি যান বসন্তিয়া মক্তব, পতাকা তোলেন, বক্তব্য রাখেন কুণাল। তারপর সোজা চলে যান রঘুরামপুরের রেডসান ক্লাবে, সেখানেও জনতার অনুরোধে বক্তব্য রাখতে হয়। এরপর জুনপুটের আলদারপুর বাজারে গিয়েও সভা করেন। ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর। এরপর কাঁথি ফিরে দলীয় একাধিক সাংগঠনিক বৈঠক সেরে পৌঁছন পটাশপুরের বিশাল জনসভায়।
কুণাল ছাড়াও বক্তা ছিলেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও জেলাপরিষদ সভাধিপতি উত্তম বারিক। সেচমন্ত্রী সভায় চিকিৎসা জগতের উপমা তুলে ধরে দলীয় নেতাদের একাংশের ভুলত্রুটির সমালোচনা করেন। বলেন, ‘‘যদি একজন ডাক্তার ভুল চিকিৎসা করে তবে কি আপনারা গোটা ডাক্তার সমাজকে বাদ দিয়ে দেন? দেন না, অন্য ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করান। ঠিক তেমনই একজন তৃণমূলনেতা ভুল করলে গোটা তৃণমূলকে সরিয়ে দেবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত দলের অন্য ৯৯ শতাংশ কর্মীই আপনাদের জন্য জীবন বাজি রেখে লড়াইয়ে আপনার পাশে আছে।’’ সভায় রাজ্য সরকারের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও পরিষেবার পাশাপাশি কেন্দ্রের মূল্যবৃদ্ধি এবং বঞ্চনা নিয়ে সরব হন তৃণমূল মুখপাত্র।