রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে চা-চক্রে কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনাসভা থেকেও রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ শানালেন তিনি। তৃণমূল মুখপাত্রের কথায়, বহু বিজেপি কর্মীর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী খারাপ দুর্ব্যবহার করেন। সেই সমস্ত বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশে কুণাল ঘোষের বার্তা, “একবার আমাকে ছুঁয়ে যান, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আপনাকে কোলে করে রাখবে।” কিন্তু কেন এমন মন্তব্য?
সম্প্রতি শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দল ছেড়েছিলেন জয়দেব দাস, বটকৃষ্ণ দাস-সহ ৩৪ জন নেতা। এর মধ্যে জয়দেব-সহ ৩৩ জন তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলছেন, যে বটকৃষ্ণের সঙ্গে এতদিন দুর্ব্যবহার করেছেন শুভেন্দু। এখন তাঁকেই হাতে পায়ে ধরে আটকে রেখেছেন শুভেন্দু। তাঁকে নন্দীগ্রামে আনার চেষ্টা চলছে। এরপরই কুণালবাবু বলেন, “বিজেপি কর্মীরা যারা শুভেন্দুর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না, যাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করছে, তাঁরা এসে একবার আমাকে ছুঁয়ে যান, তাহলে দেখবেন আপনাকে পায়ে-হাতে ধরে, জুতো পালিশ করছে। কোলে বসিয়ে রাখবে শুভেন্দুরা” সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “এতদিন দলের ৮০ শতাংশ পদ জুড়ে বসেছিলেন আপনি ও আপনার পরিবার, তারপর দলের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। এখন তো শুনতেই হবে সেইসব কথা।”
[আরও পড়ুন: জঙ্গির অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা লেনদেন, কলকাতা থেকেই কি চলত আল কায়দার টেরর ফান্ডিং?]
বুধবার সকালে কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের মুকুন্দপুর বাজারে চা চক্রে যোগ দেন কুণাল ঘোষ। সেখানে হাজির ছিলেন কাঁথি সাংগাঠনিক জেলার যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব। স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। চা-চক্র থেকে নিবিড় জনসংযোগ নিয়ে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশেও বার্তা দেন কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, দলের তরফে বড় মঞ্চ বেঁধে সভা করা হচ্ছে। আপনারা মানুষের পাশে থাকুন। চা-চক্র, গ্রামসভা করে মানুষের অভাব অভিযোগ শুনুন। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কথা তাঁদের কাছে পৌঁছে দিন।
[আরও পড়ুন: আলিপুর জেল মিউজিয়ামে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামে খাবারের মেনু! বিতর্ক তুঙ্গে, ক্ষুব্ধ বিদ্বজ্জনেরা]
সম্প্রতি দলের তরফে শুভেন্দুর গড়ে নয়া দায়িত্ব পেয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করবেন তিনি। কুণাল ঘোষের কথায়, “এখানকার নেতারা ভাল কাজ করছেন। আমি শুধু সময় দিতে এসেছি। তাঁদের সহযোগিতা করতে এসেছি। নেতা হতে আসিনি।” সবমিলিয়ে এদিন শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়ে ফের একবার বিজেপিকে কড়া বার্তা দিয়ে রাখলেন। মনে করিয়ে দিলেন, তিনি জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পরই কিন্তু ৩৩-১ গোলে বিজেপিকে কুপোকাত করেছে তৃণমূল।