নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দল ছাড়লেন তৃণমূলের (TMC) জেলা সহ সভাপতি বিপ্লব ওঝা। একইসঙ্গে তৃণমূলের টিকিটে জেতা বীরভূমের জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করলেন তিনি। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে দলত্যাগের কথা ঘোষণা করেন বিপ্লববাবু।
একসময় বীরভূম জেলা কংগ্রেসের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান হন। এরপর ২০০৯ সালে বীরভূম লোকসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ পদে শতাব্দী রায় জেতার পরেই সমস্ত কাউন্সিলর নিয়ে তৃণমূল যোগদান করেন বিপ্লব ওঝা। সেই প্রথম নলহাটি পুরসভা তৃণমূলের দখলে আসে। পরবর্তী সময় বিপ্লব ওঝাকে নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়।
[আরও পড়ুন: চিনের করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি! উদ্বেগ বাড়িয়ে মুখ খুললেন জিনপিং]
নলহাটি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীও করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু বামফ্রন্টের কাছে পরাজিত হন। পরবর্তীকালে তিনি তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদের সদস্য হন। কিন্তু তাঁকে কোনও পদে রাখা হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, বছরখানেক ধরে দলে ব্রাত্য করে রাখা হয় বিপ্লববাবুকে। সেই আক্ষেপেই তিনি দলত্যাগ করলেন বলে দাবি বিপ্লববাবুর। তাঁর আক্ষেপ, “গত একবছর ধরে দলে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। কোনও গুরুত্ব পাচ্ছি না।”
তৃণমূলে ছেড়ে তবে কি এবার বিজেপির পথে বিপ্লব ওঝা? কোন দলে যোগদান করছেন সেকথা জানাননি তিনি। তবে জল্পনা চলছেই। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার নলহাটিতে যাচ্ছেন বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই মঞ্চেই বিপ্লববাবুর বিজেপিতে যোগদান করার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি রাজনীতি থেকে যে সন্ন্যাস নিচ্ছেন না সেকথা পরিষ্কার। তিনি জানিয়েছেন, “এলাকার মানুষ চাইলে আমি যে কোনও সর্বভারতীয় দক্ষিণপন্থী দলে যোগ দিতে পারি। সেটা বিজেপি হতে পারে আবার কংগ্রেসও হতে পারে।”
এলাকায় অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন বিপ্লব ওঝা। কিন্তু বিধানসভা ভোটে টিকিট না পাওয়ায় দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে তাঁর। গত দেড়-দু’বছর ধরে একেবারে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন বিপ্লব ওঝা। কিন্তু টিকিট দেওয়া হয়নি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে তাঁকে বসানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই প্রতিশ্রুতি পালন হয়নি।
বিপ্লব ওঝার ইস্তফা প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, পদত্যাগের বিষয় এখনও দলকে কিছু জানাননি বিপ্লববাবু। তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। পদত্যাগপত্র দিয়ে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে আলোচনা করা হবে। আবার এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ জানান, “এটা নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না। জেলা নেতৃত্ব বলতে পারবে। প্রবীণরা সম্মান পাচ্ছেন। জেলায় জেলায় পুরনোদের সম্মান দেওয়া হয়েছে।”