সুমন করাতি, হুগলি: টাকা নিয়ে পঞ্চায়েতের টিকিট বিলির অভিযোগ। হুগলির বলাগড়ে চরমে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বণ্টন নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও বিধায়ক একে অপরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির যুদ্ধে চিন্তায় তৃণমূল শিবির।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই সমস্যা শুরু বলাগড় বিধানসভা এলাকায়। কে প্রার্থী হবে আর কে হবে না এই নিয়ে চলছিল নিজেদের মধ্যেই ঠান্ডা লড়াই। মনোনয়ন পর্ব শেষ হতেই অন্দরের সেই ক্ষোভ সামনে চলে এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী তালিকায় দেখা গিয়েছে, এবার জয়ী কর্মাধ্যক্ষ, প্রধান, উপপ্রধান-সহ অনেক পদাধিকারীর নাম বাদ গিয়েছে। তারপর থেকেই বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জন্মেছে নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে। এই বিষয়ে বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, বলাগড়ে ২৩৮টা গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন রয়েছে। তার মধ্যে ৯০ টি টিকিটের ব্যবস্থা আমি করতে পেরেছি। যারা আমাকে জেতাতে সাহায্য করেছিল, তাঁদেরই দিয়েছি। এক টাকাও নিইনি। বাকি সমস্ত টিকিট দিয়েছেন ব্লক সভাপতি। যাদের থেকে টাকা নিয়েছে, তাদের টিকিট দিতে পারছে না বলে এখন সমস্ত দোষ আমার উপর চাপাচ্ছেন। বিজেপির লোককে ওরাই টিকিট দিয়েছে।” অভিযোগ প্রমাণিত হলে পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন বিধায়ক।
[আরও পড়ুন: পরিবারের ভাঙন রোধে বার্তা দিতে নির্দলের প্রতীক এবার ‘সুখী পরিবার’, ব্যাপারটা কী?]
অপরদিকে ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায় জানান, “পঞ্চায়েতের জন্য একটা প্রস্তুতি সভা ছিল। সেই সময় টিকিট নিয়ে কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দুষ্কৃতী বা কোনওদিন দল করেননি, এমনকী বিজেপির লোককেও বিধায়ক টিকিট দিয়েছে। এই সমস্ত রিপোর্ট আমি দলকে দিয়েছিল। দল যা ব্যবস্থা নেবে সেটা মেনে নিতে হবে। নেত্রী ও শীর্ষ নেতৃত্বের উপর আস্থা রয়েছে।”
তৃণমূলের এই কোন্দল নিয়ে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে বিজেপি। এদিন বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, “তৃণমূলের সবটাই টাকায় চলে। যারা টাকা দিতে পেরেছে তারা টিকিট পেয়েছেন। এখন আর মা মাটি মানুষের সরকার নেই,এটা শুধুই মানির সরকার হয়ে গেছে।” তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের এই গোষ্ঠীকোন্দল পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলকে বিড়ম্বনায় ফেলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।