সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: একুশের বিধানসভা ভোটে (WB Assembly polls) তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় আশাভঙ্গ হয়েছে অনেকের। বর্তমান জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই এবার আর লড়াইয়ের সুযোগ পাননি। কাউকে আবার নিজের কেন্দ্রের বাইরে অন্য কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন পূর্ণাঙ্গ তালিকা ঘোষণা করার পরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে ক্ষোভ, বিক্ষোভ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়ায় চারবারের বিধায়ক তথা প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ (Sonali Guha)। কিন্তু এবার আর তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। তা জেনেই কেঁদে ভাসালেন সোনালি। কান্নাভেজা গলাতেই তিনি বলেন, ”বহু লড়াই-আন্দোলনে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলাম। এবার আমাকে দল টিকিট দিল না। নারী দিবসের আগে দলের থেকে যোগ্য সম্মান পেলাম।” টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামও (Arabul Islam)। পোলেরহাট এলাকায় নিজের পার্টি অফিসেই তিনি ভাঙচুর করেন। রাস্তার সামনে অবরোধ করেন তাঁর অনুগামীরা। এ নিয়ে বেলার পর থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। একইভাবে ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আবদুর রেজ্জাক মোল্লা এবং বাসন্তীর বিধায়ক গোবিন্দচন্দ্র নস্কর ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন দলের বিরুদ্ধে।
[আরও পড়ুন: ‘সম্মান না পেয়েই দল ছাড়ছেন নেতারা’, ফের জল্পনা বাড়ালেন শতাব্দী রায়]
এবারের বিধানসভা লড়াইয়ে তৃণমূলের (TMC) টিকিট পাননি সিঙ্গুরের বর্তমান বিধায়ক ‘মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও। তাঁর বদলে এবার সিঙ্গুর থেকে লড়বেন ভূমিপুত্র বেচারাম মান্না। এর জেরে ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথের সাফ বক্তব্য, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেও সিঙ্গুরে বেচারামের হয়ে প্রচার করব না।”
অন্যদিকে, প্রার্থী হতে না পেরে কার্যত বিদ্রোহ করে বিধায়ক পদই ছাড়লেন নলহাটির মইনুদ্দিন শামস। তাঁর দাবি, যাঁকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে, সেই রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংকে চান না অনেকেই। এলাকায় তাঁর কোনও পরিচিতি নেই। ক্ষোভ প্রকাশ করে মইনুদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি অন্য দলের হয়ে নলহাটি থেকেই ফের লড়বেন। সম্ভবত সংযুক্ত মোর্চা অর্থাৎ বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের প্রার্থী হতে চলেছেন। যদিও এ বিষয়ে এখনও মুখে কুলুপ মইনুদ্দিন শামসের।
[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ‘খেলা’য় নাভিশ্বাস আম আদমির, গান বেঁধে প্রতিবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের]
একই ছবি বসিরহাটে। বসিরহাট উত্তর বিধানসভা থেকে এবার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন রফিকুল ইসলাম। সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি গত পাঁচ বছর ধরে এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন করে আসছেন এটিএম আব্দুল্লাহ রনি। তিনিই টিকিটের ন্যায্য দাবিদার। তাই আজ প্রার্থী ঘোষণা হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে তৃণমূলের একাংশ। তাঁরা মাটিয়া থানার ধান্যকুড়িয়া নেহালপুর টাকি রোডে দফায় দফায় গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু করেন। মাটিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।