রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ভোটের আগে যত কাণ্ড নন্দীগ্রামে। এবার খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী কেন্দ্রে বিপাকে তৃণমূল। আদালতের নির্দেশে নন্দীগ্রাম জমি কাণ্ডে (Nandigram Land Case) গ্রেপ্তার হতে পারেন একাধিক তৃণমূল নেতা (TMC leaders)। সেই তালিকায় নাম রয়েছে মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানেরও।
নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনকারীদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের পালটা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। এরপরই হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নতুন করে নন্দীগ্রাম জমি মামলা চালুর নির্দেশ দেয়। সোমবার হলদিয়া আদালতে সেই মামলার শুনানি ছিল।
[আরও পড়ুন : লালার কাছ থেকে কারা কিনত কয়লা? হদিশ পেতে কলকাতা-সহ রাজ্যের ৫ এলাকায় তল্লাশি সিবিআইয়ের]
সেই শুনানিতে অভিযুক্তদের জামিন নাকচ করে গ্রেপ্তারির নির্দেশ দেয় হলদিয়া আদালত। তাদের সমন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিকে এই মামলার বহু অভিযুক্তকেই ফেরার দেখিয়েছিল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে অনেকেই জামিন নেননি। তাঁদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই তালিকায় রয়েছেন আবু তাহের, শেখ সুফিয়ান, স্বদেশ দাসের মত নন্দীগ্রামের প্রথম সারির তৃণমূল নেতার নামও।
প্রসঙ্গত, ৩টি মামলা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে কোনও জনস্বার্থ মামলা হয়নি। তার একটিতে অভিযুক্ত ছিলেন মেঘনাদ পাল। তিনি আবার শুভেন্দুর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট। ফলে গোটা ঘটনায় শুভেন্দুর হাত দেখছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা আবু তাহের বলেন, “২০২০ সালে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে মামলাগুলি প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এখন তিনি বিজেপিতে। তাই জমি আন্দোলনকারীদের এখন জেলে ভরতে চাইছেন তিনি।” যদিও বিজেপি’র জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি প্রলয় পালের পালটা দাবি, “আদালত যা ঠিক মনে করেছে, সেই নির্দেশই দিয়েছে।”
২০২০ সালে হলদিয়া মহকুমা আদালতে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়কার মোট ৯টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়। তার মধ্যে ৬টি মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশের আইনি বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা করেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা আইনজীবী নীলাঞ্জন অধিকারী। এর প্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয়, ওই মামলাগুলি যে পর্যায় থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল, পুনরায় সেই পর্যায় থেকেই শুরু করতে হবে। এবার সেই মামলায় ভোটের মুখে বিপাকে তৃণমূল নেতারা। বাঁকুড়ার মেজিয়া থেকে এই নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “নন্দীগ্রাম আন্দোলনকারীদের এখন কেন নোটিস পাঠানো হচ্ছে?”