বাবুল হক, মালদহ: তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে সরকারি জলকর উচ্ছেদ, চলল ভাঙচুরও। শুক্রবার এই ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মালদহের রতুয়ার রাঙামাটিয়া এলাকা। তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে মৎস্যজীবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে চলল ভাঙচুর। সরকারিভাবে যে সোসাইটিকে এই জলকর লিজ দেওয়া হয়েছিল সেই সোসাইটির হাত থেকে এই জলকর দখলমুক্ত করতে এই পদক্ষেপ বিধায়কের। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য মালদহের রতুয়া থানার রাঙ্গামাটিয়া জলকর এলাকায়। বিধায়কের নেতৃত্বে ভাঙচুর করা হয়েছে বাজিতপুর কলোনি ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটির নদীর পারে থাকা সমস্ত কিছু বলেই অভিযোগ। সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা যাতে এই জলকর ব্যবহার করতে পারে সেই জন্যই মহকুমা শাসকের নির্দেশে এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের।
মালদহের রতুয়া থানার অন্তর্গত অবস্থিত রাঙ্গামাটিয়া জলকর। ৮৯ একর দৈর্ঘ্যের এই জলকর। সরকারি এই জলকর উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতো লিজ পেয়েছে বাজিতপুর কলোনি ফিশারম্যান কো-অপারেটিভ সোসাইটি। চলতি বছরের মে মাসে ভূমি দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ মতোই জলকর দখলদারি করে ওই সোসাইটি। ২০৩১ সালের মে মাসে লিজ এর সময়সীমা শেষ হচ্ছে ওই সোসাইটির। এই লিজ বাবদ প্রতিবছর প্রায় ১৬ লক্ষ ২১ হাজার টাকা সরকারি রেভিনিউ দিতে ওই সোসাইটিকে। দখলদারি নেওয়ার পর প্রায় কোটি টাকার মাছ চাষ করেছে সোসাইটি কর্তৃপক্ষ। যার ফলে মাছ জোগানোর জন্য ঘর-সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তবে শুক্রবার দুপুরে রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়ের এই সোসাইটির বানানো ঘর ভেঙে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের পতাকা হাতে এলাকার মৎস্যজীবীদের সাথে নিয়ে এমনই পদক্ষেপ নিতে দেখা গেল বিধায়ককে। এই জল করার পাশে বানানো সোসাইটি কর্তৃপক্ষের ঘর ভেঙে ফেলা হয় পাশাপাশি সমস্ত কিছুর তুলে নিয়ে যায় লুটপাট করে বলে অভিযোগ বাজিতপুর কলোনি ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটি কর্তৃপক্ষের।
এ প্রসঙ্গে সোসাইটির ম্যানেজার উজ্জ্বল কুমার দাস জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ মতো এই জলকর লিজে তারা পেয়েছেন। সরকারি যে ধরনের নির্দেশ রয়েছে সমস্তটা অনুসরণ করে তারা এই জলকর মাছ চাষ করেছেন। হঠাৎ করে বিধায়ক সমর মুখার্জী লোকজনকে নিয়ে লুটপাট চালিয়েছে জলকরের দেখাশোনার জন্য যে ঘরটাও ভেঙে ফেলেছে। তাই বিধায়কের বিরুদ্ধে আমরা রতুয়া থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মৎস্যজীবীদের পেটে লাথি মেরে বেশ কিছু মানুষ এর জলকর নিজেদের লাভে বিক্রি করে দিয়েছে। বাজিতপুর সোসাইটির সদস্যদের অন্ধকারে রেখে এই জলকর বিক্রি করে দিয়েছে উজ্জ্বল কুমার দাস নামে একজন ব্যক্তি।তাই মৎস্যজীবী ও বাজিতপুর সোসাইটির সদস্যরা সকলে মিলে এই জলকর দখল করেছে। মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি বিধায়কের।