শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ভোটের মাত্র সপ্তাহ দু’য়েক আগে উত্তর দিনাজপুরে তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন। বিজেপিতে যোগ দিলেন শাসক শিবিরের দু’বারের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অমল আচার্য (Amal Acharjee )। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর উপস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরের পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির (BJP) জেলা সভাপতি বিশ্বজিত লাহিড়ী-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
অমল আচার্য উত্তর দিনাজপুরের রাজনীতিতে বেশ পরিচিত নাম। ২০১১ ও ২০১৬ সালে ইটাহার কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন। বেশ কিছুদিন তৃণমূলের (TMC) জেলা সভাপতি হিসেবেও কাজ করেছেন। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে জেলায় দলের ভরাডুবির পর তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান করা হয়। একুশের নির্বাচনে দল অমলবাবুকে টিকিটও দেয়নি। পরিবর্তে টিকিট দেওয়া হয় তাঁর ছায়াসঙ্গী মোশারফ হোসেনকে। যা মানতে পারেননি অমল। দলের এই সিদ্ধান্তের পরই ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু করে দেন তাঁর অনুগামীরা। প্রার্থী হওয়ার জন্য কলকাতায় গিয়ে দলের রাজ্য নেতাদের কাছে দরবারও করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ না হওয়ায় তৃণমূল ত্যাগ করেন তিনি। ভিতরে ভিতরে দলের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেন। তখন থেকেই তাঁর বিজেপি যোগের জল্পনা চলছিল। যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বুধবার তিনি গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তবে গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, পরে আরও বড় মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে অমল আচার্যকে দলে স্বাগত জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাজারহাটে আক্রান্ত সংখ্যলঘু উন্নয়নমন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, লাঠির আঘাতে ফাটল মাথা]
বিজেপিতে যোগ দিয়ে অমল জানান, ‘দলে যোগ্য সম্মান না পেয়েই বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তৃণমূল এখন কর্পোরেট দলে পরিনত হয়েছে। গরুপাচার, কয়লা পাচার সহ বিভিন্ন কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস। এই দলে আর থাকতে চাই না।’ সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই নেতার দাবি, ইটাহারের তৃণমূল প্রার্থী ধর্মের নামে ভোট করার চেষ্টা করছে। যা বন্ধ করা উচিত। পুরো জেলায় তৃণমূলকে শূন্য করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। উলটোদিকে শাসকদল অমলের দলত্যাগকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের জেলা সভাপতি কানহাইয়ালাল আগরওয়াল বলছেন, “বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তবে, ভোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।”