বিক্রম রায়, কোচবিহার: ধৈর্য আর প্রত্যাশার বাঁধ ক্রমশই ভাঙছে। সংগঠন নিয়ে দলের বিরুদ্ধে একাধিকবার ক্ষোভ উগরে, সাংগঠনিক পদে ইস্তফা দেওয়ার পরও কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী (Mihir Goswami) আশা করেছিলে, দলের সঙ্গে তাঁর সংঘাত হয়ত মিটে যাবে। স্রেফ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে কোনও বার্তার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি সহ্যের সীমা অতিক্রম করে ফেললেন এবং বুঝতে পারলেন, এই তৃণমূল (TMC) তাঁর দল নয়। তাই তার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করাই শ্রেয়। ফেসবুক পোস্টে সেই আক্ষেপ প্রকাশ করেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘুচিয়ে ফেলার বার্তা স্পষ্ট করে দিলেন মিহির গোস্বামী।
পুজোর আগে তৃণমূল নেত্রী সংগঠনে বড়সড় রদবদল ঘটানোর পর থেকেই দলের নানা স্তরে তৈরি হয়েছিল ক্ষোভ। কেউ পছন্দমতো পদ হারানোয় ক্ষুব্ধ, কেউ বা ততটা গুরুত্ব পাননি বলে হতাশ। যদিও দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে এবং রদবদলের গুরুত্ব বুঝে অনেকে তা মেনেও নেন। মানতে পারেননি আবার অনেকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
[আরও পড়ুন: ২ লক্ষ টাকার লোভ! মুর্শিদাবাদে স্ত্রীকে খুন করে উধাও স্বামী]
একাধিকবার ফেসবুকে পোস্ট করে দলের প্রতি তাঁর অভিযোগের কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন। কখনও ক্ষোভ, কখনও বা অভিমান প্রকাশ করেছেন। শেষ পোস্টে মিহিরবাবু স্পষ্টই লিখেছিলেন, দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পর থেকে গত কয়েকমাসে তিনি দলনেত্রীর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া আশা করেছেন। নেত্রী যদি দল থেকে তাঁকে বরখাস্তও করতেন, তাতেও হয়ত ততটা খারাপ লাগত না, যতটা তাঁর একেবারে নিঃশব্দ ভূমিকায় লাগছে। আর সেখান থেকেই তাঁর মনে হয়েছিল, এই দল আর তাঁর নয়। নেত্রীর হাতেও আর নেই দলের রাশ।
[আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে ডেকে তৃণমূল নেতাকে খুন, নেপথ্য রাজনৈতিক শত্রুতা? ধন্দে পুলিশ]
বৃহস্পতিবারের পোস্টে সেকথাই আরও বিশদে লিখলেন মিহিরবাবু। লিখলেন, ”বাইশ বছর আগে যে দলটির সঙ্গে যোগ দিয়েছিলাম, আজকের তৃণমূল সেই দল নয়। এই দলে আমার জায়গা নেই। তাই আজ এই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আমার যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাই। আমি আশা করছি, আমার দীর্ঘদিনের সাথী, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরা আমাকে মার্জ্জনা করবেন।” যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের ইস্তফাপত্র তিনি দলের কাছে পেশ করেছেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি।