টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: টানা ৫৩ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশি। আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা কলকাতা রওনার পরই বিজয়া সম্মিলনীর কর্মসূচিতে যোগ বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের। মঞ্চে উঠে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার অভিযোগ সুর চড়ালেন তিনি। তাঁকে স্রেফ হেনস্তা করা হয়েছে বলেই দাবি তৃণমূল বিধায়কের।
ম্যারাথন আয়কর তল্লাশির পর বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তন্ময় ঘোষের হুঙ্কার, “আয়কর দপ্তরের হানা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিভিন্নভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দিয়ে হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আয়কর দপ্তর দিয়ে গত দুদিন ধরে আমাকে হেনস্তা করা হল। তবে অন ক্যামেরা আমি বলছি, আমার কাজ, ব্যবসা, আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি কোনও দুর্নীতি করিনি। কোনও দুর্নীতির সঙ্গে আজ অবধি জড়াইনি। যতদিন আমি রাজনীতিতে থাকব, মানুষ হিসাবে থাকব। মাথা উঁচু করে থাকব।” তিনি আরও বলেন, “আমার বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে ব্যবসা করছেন। আমি সেই বাড়ির ছেলে। আমার যা কিছু তা বাবার করা। আজ বিধায়ক হয়েছি বলে রমরমা নয়। তাই এভাবে যত হেনস্তা করবেন, তৃণমূল কর্মীদের জেদ তত বাড়বে।”
[আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারকে ‘মার’! গ্রেপ্তার তৃণমূল কাউন্সিলর-সহ ৫]
উল্লেখ্য, গত বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ আয়কর দপ্তরের দুটি দল হানা দেয় বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থা-সহ পৈতৃক চালকলে। সেই সময় তন্ময়বাবু কলকাতায় ছিলেন। বেলা সাড়ে এগারোটা থেকে সারারাত গড়িয়ে চলে তল্লাশি। তার মাঝে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কলকাতা থেকে সরাসরি তাঁর পৈতৃক চালকলে পৌঁছন বিধায়ক। সূত্রের খবর, তার পর থেকে লাগাতার জেরা শুরু হয় তন্ময়বাবুর আত্মীয়স্বজন আর হিসাবরক্ষকদের। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ চালকল থেকে বেরিয়ে মাত্র একবার বাড়িতে যান তন্ময়বাবু।
চূড়ামণিপুরের চালকলে মাঝে কয়েকবার খাবারের প্যাকেট নিয়ে ঢুকতে দেখা যায় আয়কর আধিকারিকদের। ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া ঘেরাটোপ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফের তিনি কলেজ রোডের বাড়ি থেকে চূড়ামণিপুর চালকলে ফিরে আসেন। শুক্রবার সকালেও তল্লাশি চলতে থাকে। টানা তল্লাশিতে বিস্মিত স্থানীয় বাসিন্দারাও। টানটান উত্তেজনার প্রহর গুনতে থাকেন মন্দির নগরীর মানুষজন। শেষমেশ শুক্রবার সন্ধ্যায় আয়কর দপ্তরের আধিকারিকদের গাড়ির পিছু পিছু বিধায়ক চালকল থেকে বেরিয়ে যান। সরাসরি বিষ্ণুপুর শহরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী কর্মসূচির মঞ্চে পৌঁছন। মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান।