রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ৭ ফেব্রুয়ারি আদ্যোপান্ত সরকারি কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ওইদিন হলদিয়ায় দু’টি প্রকল্পের সূচনা করবেন তিনি। একই সঙ্গে শিলান্যাস হবে একটি প্রকল্পের। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান পুরোপুরি অরাজনৈতিক হলেও, তাৎপর্যপূর্ণ সেদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীকেও। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান নিজে দিব্যেন্দুকে চিঠি লিখে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাও আবার অনুষ্ঠানের প্রায় এক সপ্তাহ আগে। আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে দিব্যেন্দুও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর ওই সরকারি অনুষ্ঠানে যাবেন।
এমনিতে হলদিয়া দিব্যেন্দুর (Dibyendu Adhikari) নিজের লোকসভা কেন্দ্র তমলুকের অন্তর্গত। সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে তাঁর আমন্ত্রণ পাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু ইদানীং রাজ্যে কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের সাংসদের ডাকা প্রায় বেনজির হয়ে উঠেছে। সেভাবে কেন্দ্রের কোনও অনুষ্ঠানে রাজ্যের শাসকদলের কোনও প্রতিনিধিকেই দেখা যায় না। এই পরিস্থিতিতে দিব্যেন্দুকে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের এই সৌজন্য দেখানো রাজনৈতিকভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, দিব্যেন্দুর দাদা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর গোটা অধিকারী পরিবারের সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের। তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতেই আর দেখা যায় না শিশির বা দিব্যেন্দুকে। এমনকী, সম্প্রতি নন্দীগ্রামে দলনেত্রীর সভামঞ্চেও দেখা যায়নি অধিকারী পরিবারের কোনও সদস্যকে। শিশির অধিকারী একাধিকবার প্রকাশ্যে দল তথা নেত্রীর আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দিব্যেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে দিব্যেন্দুর ডাক পাওয়াটা রাজনৈতিকভাবে বাড়তি তাৎপর্য রাখে।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগদান নিয়ে ‘ভুয়ো দাবি’, অর্জুন সিংকে আইনি নোটিস পাঠাচ্ছেন অরূপ রায়]
তৃণমূল (TMC) সাংসদও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর ওই সরকারি অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন। দিব্যেন্দুর কথায়, প্রধানমন্ত্রীর সভায় স্থানীয় সাংসদ হিসেবে উপস্থিত না থাকার কোনও কারণ নেই। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, শুভেন্দু- সৌমেন্দুর পর, অধিকারী পরিবারের বাকি সদস্যদের দলে টেনে বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে চায় বিজেপি। আর সম্ভবত সেকারণেই, সরকারি অনুষ্ঠানে তমলুকের সাংসদকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁর সঙ্গে নৈকট্য বাড়িয়ে নিতে চাইছে কেন্দ্রের শাসক শিবির।