বাবুল হক, মালদহ: এক আদিবাসী মহিলাকে 'ডাইনি' অপবাদ দিয়ে মারধর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ওল্ড মালদহের (Malda) ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীও। অভিযোগ, প্রথমে নির্যাতিতার অভিযোগও নিতে চায়নি থানা। গোটা ঘটনায় জেলার রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
বিষয়টা ঠিক কী? জানা গিয়েছে, গ্রামের এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। অসুখ নাকি সারছেই না। এজন্য গ্রামেরই এক মহিলাকে সন্দেহ করেন অসুস্থ সদস্যার স্বামী। গ্রামে সভা করে ওই মহিলাকে 'ডাইনি' অপবাদ দেওয়া হয়। গুণিনের কাছে নিয়ে গিয়ে ওই মহিলার উপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয় বলেও অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, দিন কয়েক ধরে ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। বুধবার খবর পেয়ে ওই গ্রামে ছুটে যায় পুলিশ। তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সুস্থ হয়ে মালদহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে যান ওই আদিবাসী মহিলা। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার তাঁর সেই অভিযোগপত্র নেয়নি বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরের থানায় সেনা-পুলিশ সংঘর্ষ! আহত ৫ পুলিশকর্মী, ১৬ জওয়ানের বিরুদ্ধে FIR]
পুলিশ জানিয়ে দেয়, অভিযোগপত্রে ডাইনি শব্দটি লেখা থাকলে অভিযোগ নেওয়া হবে না। বাধ্য হয়ে পুলিশের কথামতো দ্বিতীয়বার অভিযোগপত্র লিখতে বাধ্য হন ওই নির্যাতিতা। গ্রামের ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলেও রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি বিধায়ক গোপাল চন্দ্র সাহার অভিযোগ, "ঘটনায় তৃণমূল নেতা জড়িত রয়েছেন, তাই পুলিশ এসব নোংরা খেলায় মেতেছে।" ওই তৃণমূল সদস্যার স্বামী গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, "এটি সাজানো ঘটনা। গ্রামের লোকজন কী করেছেন, সেটা সমাজ বলবে। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।" ভাবুকের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি দিলীপ হেমব্রম বলেন, "এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নেই। গ্রামবাসীরা মিলে ওইসব করেছেন।" এই ঘটনায় জেলা পুলিশ প্রশাসনের কারও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।