রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গে একই মঞ্চে কাঁথির পুরপ্রধান সুবলকুমার মান্না। শুধু তাই নয়, প্রণাম করে শিশিরবাবুকে রাজনৈতিক গুরু বলে সম্বোধন করে, তাঁর সঙ্গে একই মঞ্চে থাকাটা বড় ভাগ্যের ব্যাপার বলেই মন্তব্য তৃণমূল পুরপ্রধানের। যাকে ঘিরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিতর্কে জড়িয়েছেন সুবলবাবু। দল তাঁকে শোকজ করতে চলেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাঁথি ১ব্লকের সাবাজপুট এলাকায় একটি বেসরকারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে ছিলেন কাঁথির সাংসদ শিশিরবাবু ও পুরপ্রধান সুবলবাবু। পাশাপাশি দুজনকে বসার আসন দেওয়া হয়। প্রদীপ জ্বালানোর সময় শিশিরবাবু সুবল মান্নাকে কাছে ডেকে নেন। শিশিরবাবু বক্তব্য শেষ করার পর পুরপ্রধান সাংসদকে প্রণাম করেন। তারপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাংসদকে রাজনৈতিক গুরু বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, জন্ম দিয়েছেন পিতামাতা ঠিকই। কিন্তু যিনি পথ দেখিয়েছেন,যার জন্যে আজ আমি এখানে, সেই রাজনৈতিক গুরু শিশির অধিকারীকে প্রণাম জানাই।
[আরও পড়ুন: দুয়ারে পুরসভা! নতুন বছরে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য চালু ‘নগরবন্ধু’ স্কিম]
পুরপ্রধানের এই বক্তব্য নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। শিশিরবাবু এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ হলেও শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে শাসকদলের সঙ্গে তাঁর বহু ক্রোশের দূরত্ব। এদিকে প্রায় ৩০বছর ধরে শিশির অধিকারীর সঙ্গে রাজনীতি করেছেন সুবল মান্না। তাঁর হাত ধরেই টানা ৬ বার কাউন্সিলর হয়েছেন বর্তমান পুরপ্রধান। এই অনুষ্ঠানের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে অস্বস্তিতে পড়েছে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস।
বিষয়টি নিয়ে শিশিরবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সুবলবাবু বলেন, একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে আমায় অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখি, শিশিরবাবু সেখানে বসে আছেন। আমি তাঁকে অসম্মান করতে পারি না। সেখানে অনেক অভিভাবকরাও ছিলেন। ফলে সেখান থেকে ফিরে আসা সম্ভব হয়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এভাবে ফিরে গেলে, বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারত। তাই আমি সৌজন্য দেখিয়েছি।
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলেন, একটি নীতির উপর তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন চলে। কেউ যদি দলের নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজকর্ম করবেন মনে করেন তা দল মেনে নেবে না। যে পরিবারের সদস্য বিরোধী দলনেতা হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতিনিয়ত অসম্মান করে চলেছেন। সেই পরিবারের প্রতি আমাদের সৌজন্য থাকাটা কী খুব জরুরি। তবে এ বিষয়ে পুরপ্রধানকে শোকজ করা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উওর না পাওয়া গেলে হাইকম্যান্ডের নির্দেশে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[আরও পড়ুন: ‘জুতো পরিয়ে দাও’, নির্দেশ অমান্য করায় বেধড়ক মার শিক্ষিকাকে, গ্রেপ্তার ব্যক্তি]
দেখুন ভিডিও: