shono
Advertisement

সেদিনের হার্মাদরা শুভেন্দুর সঙ্গে ঘুরছে, ‘হার্মাদ মুক্তি দিবসে’তোপ তৃণমূলের

অখিল গিরি চ্যাপ্টার ক্লোজড, বিরবাহা ইস্যু ওপেন, জানিয়ে দিলেন কুণাল ঘোষ।
Posted: 12:47 PM Nov 25, 2022Updated: 12:47 PM Nov 25, 2022

স্টাফ রিপোর্টার, কাঁথি: হার্মাদ মুক্তি দিবসের কর্মসূচিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভায় ‘হার্মাদ মুক্তি’ কথাটাই ছিল না খেজুরিতে। অথচ ২০০৭ সালের ২৪ নভেম্বর লাল সন্ত্রাসের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন‌্য খেজুরিতে ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ পালন করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। জোড়াফুল শিবিরে থাকার সময় শুভেন্দুও এই কর্মসূচিতে আসতেন। কিন্তু এবছর বৃহস্পতিবার খেজুরির কামদেবনগরে এক পথসভায় ওই কর্মসূচি পালন করলেও শুভেন্দুর মঞ্চে কোথাও ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ কথাগুলি লেখা ছিল না। শুধু তাই নয়, উলটে বিজেপির ব‌্যানারে লেখা ছিল, ‘অখিল গিরির মন্তব‌্যের প্রতিবাদে’ সভা। ‘হার্মাদ মুক্তি দিবসে’র কর্মসূচিতে শুভেন্দুর মঞ্চে এমন ব‌্যানার দেখে কার্যত বিস্মিত স্থানীয়রা।

Advertisement

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, ‘‘সেদিন যারা ছিল সিপিএমের হার্মাদ, তারাই এখন শুভেন্দুর সর্বক্ষণের সঙ্গী। ২০০৭ সালে যারা ছিল লাল সন্ত্রাসের কুখ‌্যাত নায়ক, সেই হার্মাদদের খেজুরিতে গেরুয়া পতাকা নিয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নিয়েছে বিরোধী দলনেতা। সেদিন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সদস‌্যদের গণহত‌্যার নায়করা এখন ওর সঙ্গে থাকায় ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ মঞ্চে লিখতে পারেনি শুভেন্দু।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ করে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘খেজুরি ও নন্দীগ্রামের অধিকাংশ সিপিএম হার্মাদ আজ বিজেপিতে এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার মোড়কে ঢুকছে। অভিযোগ আসছে, শুভেন্দুর কনভয়ে বোমা নিয়ে এসে গ্রামে দেওয়া হচ্ছে। ওর কনভয়ে তল্লাশি চাই। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তায় বোমা ঢোকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। তদন্ত দরকার।’’

[আরও পড়ুন: SSC মামলা: সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি রাজ্যের, বেনামী নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ]

‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে‌ বিকেলে খেজুরি কলেজ মাঠে বিশাল জনসভা করে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই সভায় প্রধান বক্তা দলের মুখপাত্র তথা রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু ও বিজেপিকে তুলোধোনা করেন। রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে মন্তব্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘অখিল গিরি চ্যাপ্টার ক্লোজড। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) চ্যাপ্টার ওপেন থাকছে। কারণ, অখিলবাবু নিজে ও দল এবং নেত্রী স্বয়ং ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু নির্লজ্জ-বেহায়া শুভেন্দু ঠান্ডা মাথায় জঙ্গল-কন্যা রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে জুতোর তলায় থাকার কথা বলেছিলেন। আমি এখানে বলে যেতে চাই সেই বিরবাহা হাঁসদার জুতো পালিশ করিয়ে ছাড়ব।’’ পাশেই বসা রাজ্যের কারামন্ত্রীকে বলেন, ‘‘অখিলবাবু, আপনার জেলের একটা সেল ফাঁকা রাখবেন। শুভেন্দুকে জেলে ঢুকিয়েই ছাড়ব।’’

গতকাল সকালে খেজুরি কলেজ মাঠ যাওয়ার পথে এক কিমি দূরে কামদেবনগরে রাস্তার পাশে একটি ছোট মঞ্চে সভা করে বিজেপি। সেখানে গেরুয়া মঞ্চে যেমন ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ লেখা ছিল না তেমনই লোকজন তেমন না হওয়ায় সামান‌্য বক্ত‌ব‌্য রেখেই আয়োজকদের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত চলে যান শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার পাশাপাশি মিঠুন চক্রবর্তীকেও তুলোধোনা করেন তৃণমূল মুখপাত্র। একের পর এক দল পালটেছেন মহাগুরু বলে অভিযোগ করে কুণাল বলেন, ‘‘মিঠুনদাকে জিজ্ঞেস করবেন কত সালে কোন দল করতেন, উনি বলতে পারবেন না। সিনেমা সই করার মতো উনি দল পরিবর্তন করেছেন। এসইউসিআই দলটাতে যোগ দিতে শুধু ওঁর বাকি রয়েছে।’’

[আরও পড়ুন: পনেরো বছর পরে জাপানের মতো বিশ্বকাপে খেলতে পারে ভারতও! মত মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের]

নন্দীগ্রামে গেরুয়া শিবিরে ধস নেমেছে জানিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘আদি বিজেপিরা বলছেন, আমাদের লড়াই ছিল অধিকারীদের বিরুদ্ধে। এখন ওরাই বিজেপির দখল নিয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলে দলে তৃণমূলে চলে আসছে।’’ ছিলেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি, দুই সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া ও অভিজিৎ দাস, প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর, যুব তৃণমূলের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, ইনটাক সভাপতি বিকাশচন্দ্র বেইজ, তরুণ জানা, সুপ্রিয় চন্দ্র, খেজুরির দুই ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিমান নায়ক ও শ্যামল মিশ্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement