সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৬ দিনে ১৪ বার। ফের বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম। মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় ফের পেট্রলে লিটারপ্রতি দাম বেড়েছে ৮৪ পয়সা। যার ফলে শহরে পেট্রলের নতুন দাম হয়েছে ১১৫ টাকা ১২ পয়সা। ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি বেড়েছে ৮১ পয়সা। ফলে শহরে ডিজেলের নয়া দাম হল ৯৯ টাকা ৯৩ পয়সা। নয়া দাম কার্যকর হবে বুধবার সকাল থেকে। অথচ কেন্দ্রের জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানোর চেষ্টা নেই। উলটে কেন্দ্রীয় সরকার ‘অজুহাত’ খুঁজছে। কেন্দ্রের এই ‘অসংবেদনশীল’ অবস্থান নিয়ে একদিকে যেমন বিরোধীরা সরব হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই অশান্তি বাড়ছে এনডি’র অন্দরেও। জ্বালানি যন্ত্রণা নিয়ে এবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব খোদ বিজেপির শরিকদল জেডিইউ (JDU)।
মঙ্গলবার সংসদে প্রথম বিশ্বের কয়েকটি দেশের উদাহরণ তুলে এনে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী (Hardeep Singh Puri) দাবি করেছেন, ভারতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি অন্যান্য দেশের তুলনায় নগণ্য। এদিন সংসদে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বলেন,”২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত আমেরিকায় জ্বালানির দাম বেড়েছে ৫১ শতাংশ, কানাডায় ৫২ শতাংশ, জার্মানিতে ৫৫ শতাংশ, ব্রিটেনে ৫৫ শতাংশ, ফ্রান্সে ৫০ শতাংশ, স্পেনে ৫৮ শতাংশ। সেখানে ভারতে পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েছে মাত্র ৫ শতাংশ।” প্রশ্ন উঠছে, ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে প্রথম বিশ্বের এই দেশগুলির তুলনা কতটা যুক্তিযুক্ত?
[আরও পড়ুন: সঞ্জয় রাউতের জমি-ফ্ল্যাট বাজেয়াপ্ত করল ED, রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ শিব সেনার]
তৃণমূল মনে করছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই সাফাই বিভ্রান্তিকর। সাধারণ মানুষের জ্বালানি যন্ত্রণা দূর না করে, সংখ্যাতত্ত্বে ফাঁসিয়ে আমজনতাকে আরও বিভ্রান্ত করছে সরকার। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এদিন বলেন,”আমরা শুরু থেকেই বলছি, পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। পাঁচ রাজ্যের ভোটের আগে তো জ্বালানির দাম বাড়ছিল না। তখনও আমরা বলেছিলাম এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আজ সেটা প্রমাণিত।” কুণালবাবুর প্রশ্ন, “কতটা অসংবেদনশীল হলে বিজেপি মানুষের টাকা এভাবে লুট করতে পারে! আজ পেট্রল-ডিজেলের দাম আগুন। অফিস-কাছারিতে যাওয়ার খরচ কত বেড়ে গিয়েছে। অথচ সরকার শুধু সংখ্যার খেলায় সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।” তৃণমূলের (TMC) পাশাপাশি অন্য বিরোধীরাও পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় কমিটিতেও কি বঙ্গের যুবব্রিগেড! জোর জল্পনা কেরলের পার্টি কংগ্রেসে]
তবে শুধু যে বিরোধীরা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাই নয়। বিজেপির (BJP) শরিক দল জেডিইউও এনিয়ে সরব হয়েছে। জনতা দল ইউনাইটেডের শীর্ষ নেতা কেসি ত্যাগী এদিন বলেন,”পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করাটা ভীষণ জরুরি। আমাদের অনুরোধ গত ১৫ দিনে যে দাম বেড়েছে সেটা প্রত্যাহার করা হোক। সরকারকে দ্রুত মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে। নাহলে যেসব ভোটার এনডিএকে (NDA) সমর্থন করেছে তারাও সরে যেতে পারে।” বস্তুত, বিভিন্ন ইস্যুতে এমনিতেই নীতীশ কুমারের দলের সঙ্গে বিজেপির মতানৈক্য চলছে। এর মধ্যে আবার কে সি ত্যাগীর (KC Tyagi) মন্তব্য চিন্তা বাড়াবে গেরুয়া শিবিরের।