শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: হাঁসখালি, শীতলকুচির পর এবার চন্দ্রকোনা। ফের খুন তৃণমূল কর্মী। এবার নিজের নির্মীয়মাণ বাড়িতেই খুন হলেন চন্দ্রকোনার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। তবে খুনের সঙ্গে মহিলাঘটিত ঘটনার যোগ রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। শনিবার সন্ধে পর্যন্ত খুনির পরিচয় মেলেনি।
মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম বটকৃষ্ণ পাল (৫৭)। বাড়ি চন্দ্রেকানার পুড়শুড়ি গ্রামে। শুক্রবার রাতে তাঁকে ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার সকালে ঘটনা জানাজানি হতেই ভিড় জমে যায় ঘটনাস্থলে। গ্রামবাসীদের চাপে মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পরিবারের দাবি মেনে বিকেলে পুলিশ কুকুর আনা হয়। তার সাহায্যে ঘটনাস্থলের অদূরে এক ঝোপ থেকে মহিলাদের চপ্পল উদ্ধার করেছে পুলিশ । ফলে ঘটনার অন্য মোড় নিতে চলেছে বলে জানিয়েছেন ঘাটালের এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী । তিনি বলেন, “এটা নিশ্চিত বটকৃষ্ণবাবুকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে । পুলিশ কুকুর আনা হয়েছে। আশা করছি আততায়ীর সন্ধান মিলবে।”
[আরও পড়ুন: বাইকে বসে শাহিদের ঠোঁটে ঠোঁট রাখলেন কৃতী! নতুন ছবি ঘিরে শোরগোল]
চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের পুড়শুড়ি গ্রামের বাসিন্দা বটকৃষ্ণ পাল এলাকায় সক্রিয় তৃমমূল কর্মী বলে পরিচিত। এক সময় তিনি পুড়শুড়ি গ্রামের তৃণমূলের বুথ সভাপতিও ছিলেন। পেশায় কৃষক বটকৃষ্ণবাবুর এক ছেলে। কর্মসূত্রে হাওড়ায় থাকেন। নিজের বাড়ি থেকে সামান্য দূরে মন্দিরের পিছনে একটি পাকাবাড়ি বানাতে শুরু করেছিলেন বটকৃষ্ণবাবু। শুক্রবার রাতে খাওয়ার পর ওই বাড়িতেই শুতে যান। যদিও নির্মীয়মাণ বাড়ির এখনও দরজা-জানালা বসেনি। একটি তক্তপোষে মশারি টাঙিয়ে শুয়েছিলেন তিনি। শনিবার সকালে তৃণমূলকর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাটের তলায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর স্ত্রী সরস্বতী পাল। জানা গিয়েছে, তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলায় গভীর কোপ। ধড় থেকে মাথা প্রায় আলাদা হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। এরপর খবর যায় পুলিশে।
সিআইডি তদন্তের দাবিতে মৃতদেহ উদ্ধার করতে বাধা দেন গ্রামবাসীরা। ফলে মৃতদেহ সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ঘটনায় মহিলা জড়িত। নিহতের ছেলে গোবিন্দ পাল বলেন, “বাবাকে কে বা কারা এমন নৃশংসভাবে খুন করল তার তদন্ত দাবি করেছি। বাবার সঙ্গে কারও বিবাদ ছিল বলে আমরা জানি না।” চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহাদেব মল্লিক বলেন, “বটকৃষ্ণ পাল আমাদের দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এক সময় বুথ সভাপতিও ছিলেন। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে এটা রাজনৈতিক খুন নয় বলেই মনে হচ্ছে। আমরা তদন্ত দাবি করেছি।’’