সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রদীপের নিচে থাকা অন্ধকারের মতোই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার নিচে লুকিয়ে আছে কুসংস্কারের ভারত! একদিকে যখন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা সূর্যে অভিযান করার পরিকল্পনা নিচ্ছে তখনও অনেক মানুষের মন থেকে দূর হয়নি অশিক্ষা। এর ফলে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মানুষ পিটিয়ে মারার মতো ঘটনা যেরকম বাড়ছে তেমনি বাড়ছে কুসংস্কারও। যার ফলে একান্ত প্রিয়জনকেও নির্মম কষ্ট দিতে পিছপা হয় না অনেকে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বরেলি জেলার গাঙ্গহোরা গ্রামে। যেখানে নিজের বাবাকে সুস্থ করতে বউদির শরীরে ১০১টি কোপ মারার অভিযোগ উঠেছে ননদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে আক্রান্ত ওই মহিলা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। তাঁর দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আট বছর আগে গাঙ্গহোরা গ্রামের বাসিন্দা রেনুর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সঞ্জীব নামে এক যুবকের। এমনিতে সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। কিন্তু, কিছুদিন আগে সঞ্জীবের বাবা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপরই তাঁকে সুস্থ করার জন্য তন্ত্রসাধনা করতে শুরু করে সঞ্জীবের বোন মণি। তারই অঙ্গ হিসেবে গত মঙ্গলবার রাতে রেনুকে একটি ঘরে আটকে রেখে তার শরীরে ছুরি নিয়ে চড়াও হয় মণি। তার সঙ্গে ছিল স্বামী মুলি ও এক ভাই রাজু। রেনুর হাত ও পা বেঁধে দিয়ে তাঁর মুখে ও সারা শরীরে ১০১টি কোপ মেরে ক্ষতচিহ্ন তৈরি করে। প্রবল যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলেও রেনুকে মুক্তি দেয়নি তারা।
[আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়নে নেই ভাল আইডিয়া! আমলাদের বকলেন মোদি ]
কিছুক্ষণ বাদে অভিযুক্তদের সতর্কতার সুযোগ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান রেনু। কিন্তু, শরীর সঙ্গ না দেওয়ায় কিছুটা দূরে গিয়ে রাস্তার ওপর পরে যান। ওই সময়ে সেখানে টহলদারি চালাচ্ছিলেন স্থানীয় থানার একজন পুলিশ কনস্টেবল। রাস্তার ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় এক মহিলাকে পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে মহিলার বাড়ির লোকদের কাছে খবর পৌঁছালে হাসপাতালে এসে হাজির হন তাঁরা। বর্তমানে রেনুর দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে মণি ও বাকি দু’জনের নামে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত মণি গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা পলাতক।
[আরও পড়ুন: ফাঁসির রায় সংশোধনের আরজি, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ নির্ভয়ার ধর্ষক বিনয় শর্মা ]
এপ্রসঙ্গে বারাদারি পুলিশ থানার OC নরেশ ত্যাগী জানান, আক্রান্ত রেনু বর্তমানে হাসপাতালের আইসিইউতে ভরতি আছেন। মুখ-সহ তাঁর সারা শরীরে ৩০০টি সেলাই পড়েছে। আক্রান্তের দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মূল অভিযুক্ত মণি গ্রেপ্তার হলেও বাকি দুজন পলাতক। তাদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। রেনু একটু সুস্থ হলে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।
The post তন্ত্রসাধনা! বাবাকে সুস্থ করতে বউদির শরীরে ১০১টি কোপ মারল ননদ appeared first on Sangbad Pratidin.