নব্যেন্দু হাজরা: এসইউভি হোক বা বাস, পর্যটনে গতি আনতে এবার বাণিজ্যিক গাড়িকে সর্বভারতীয় টুরিস্ট পারমিট দেওয়া হবে। দেশব্যাপী পর্যটনশিল্পে জোয়ার আনার লক্ষ্যে এমনই সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় জাতীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গাড়িতে নয় বা তার বেশি সংখ্যক সিট থাকলেই এই পারমিটের জন্য আবেদন করা যাবে। এই পারমিট থাকলে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে দেশের যে কোনও প্রান্তে।
এতদিন বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে অল ইন্ডিয়া টুরিস্ট পারমিট বলে কিছু ছিল না। কেউ গাড়ি অন্য রাজ্যে নিয়ে গেলে তাঁকে ২৮ দিনের জন্য স্পেশ্যাল পারমিট করাতে হত। ওই সময়ের মধ্যেই গাড়ি ফিরিয়ে আনা বাধ্যতামূলক ছিল। ফলে বহু বাস বেআইনিভাবে চালানো হত বলে অভিযোগ। তাই সর্বভারতীয় টুরিস্ট পারমিট দিয়ে এই গাড়িগুলিকে একটা সিস্টেমে বাঁধতে চাইছে কেন্দ্র। পয়লা এপ্রিল থেকে এই পারমিটের জন্য আবেদন করা যাবে। এই পারমিটের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। তারপর ফের তা রিনিউ করতে হবে।
[আরও পড়ুন: ভোটের উৎসবে বেরঙিন দোল, ব্যাপক ক্ষতির মুখে দিঘার হোটেল মালিকরা]
পরিবহণ মালিকদের অনেকেই টুরিস্ট গাড়ি ব্যবসায় নামালেও তা ভিনরাজ্যে পাঠাতে পারতেন না। পর্যটক নিয়ে তা পাঠালেও তার জন্য ২৮ দিনের স্পেশ্যাল পারমিট নিতে হত। ওই সময় কেটে গেলে আবারও আবেদন করে ফের স্পেশ্যাল পারমিট নিতে হত। পুরী থেকে উত্তর ভারত বা দক্ষিণ ভারত বহু পর্যটক বাসে করে ঘুরতে যান। তাঁদের জন্যই এই বিশেষ পারমিটের ব্যবস্থা ছিল। তার বদলে এবার আসছে নয়া পারমিট। ন’সিটার ছাড়া ৩০ সিট বা বড় বাসের ক্ষেত্রেও এই টুরিস্ট পারমিট পাওয়া যাবে। তবে স্টেজ ক্যারেজ গাড়িই এই পারমিট পাবে। পরিবহণদপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, বহুবার দেখা গিয়েছে, পর্যটক নিয়ে কোনও টুর প্ল্যানের পর কোনও কারণে স্পেশ্যাল পারমিট নেওয়া বাস বা গাড়ি যদি বিগড়ে যেত তাহলে ঘুরতে যাওয়াই বাতিল হয়ে যেত। ফলে একদিকে যেমন সমস্যায় পড়তেন টুর অপারেটর। তেমনই সমস্যায় পড়তেন পর্যটকরাও। এবার নয়া পারমিট দেওয়ার ফলে এই সমস্যা হবে না। কারণ, অনেক গাড়িই থাকবে এই পারমিটের। গাড়ি বদলাতে সমস্যা হবে না।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই তাই খুশি বাস-মালিকরা। তাঁদের বক্তব্য, এতদিন অনেকেই স্পেশ্যাল পারমিট নিয়ে অন্য রাজ্যে পর্যটক নেওয়ার ঝুঁকি নিতেন না। কিন্তু অল ইন্ডিয়া টুরিস্ট পারমিট চালু হওয়ায় বহু অপারেটর গাড়ি নামাবেন এতে। অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই পারমিট দেওয়া শুরু হলে অনেক পরিবহণ মালিকই উপকৃত হবেন। অনেকেই আবেদন করবেন।”