সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজধানী দিল্লিতে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে ৭হাজার ৬০০কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ মাদক। এই আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের তদন্তে নেমে একে একে যে তথ্য প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে তাতে 'চক্ষু চড়কগাছ' তদন্তকারীদের। জানা যাচ্ছে, পুরনোর পাশাপাশি ও নয়া পদ্ধতিকে মিলিয়ে দেশব্যাপী এই মাদক কারবারের জাল বিছিয়েছিল পাচারকারীরা। মাদক কারবারে ব্যবহৃত হত অতীতের ছেঁড়া নোট, পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে চলত লেনদেন।
সম্প্রতি দিল্লির রমেশ নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২০০ কেজি কোকেন উদ্ধার করে পুলিশ। যার বাজার মূল্য ২হাজার কোটি টাকা। মহিপালপুরে উদ্ধার হয় ৫৬০ কেজি কোকেন যার বাজারদর ৫৬০০ কোটি টাকা। সেই সূত্র ধরেই গত কয়েকদিনে একের পর এক অভিযান চলে দেশের নানা প্রান্তে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে ৭৬০০ কোটি টাকার মাদক। এই বিরাট মাদক চক্রে পাওয়া গিয়েছে দুবাইয়ের যোগ। তদন্তকারীরা স্বীকার করে নিয়েছেন দেশের ইতিহাসে এত বিপুল পরিমাণ মাদক এর আগে কখনও উদ্ধার হয়নি। ঘটনার তদন্তে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। তাঁরা হলেন, তুষার গোয়েল (৪০), হিমাংশু কুমার (২৭), ঔরঙ্গজেব সিদ্দিকি (২৩) ও মুম্বাইয়ের বাসিন্দা ভারত কুমার জৈন (৪৮)।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ জানতে পারে, পুরনো দিনের সিনেমার অনুকরণে এই মাদক পাচারে বিভিন্ন রকম কোড ওয়ার্ড ব্যবহার করতেন কারকারীরা। এবং আন্তর্জাতিক পথ ধরে আসা এই বিপুল পরিমাণ মাদক ডেলিভারির ক্ষেত্রেও থাকত অভিনব পন্থা। মাদক সরবরাহকারী ও গ্রাহক কেউ একে অপরকে চিনতেন না। তবে দুজনের কাছে থাকত একটি ছেঁড়া নোটের অর্ধেক করা খণ্ড। একই সিলিয়াল নম্বরের সেই নোট একত্রে মিলে গেলেই সরবরাহ করা হত টন টন মাদক। নিজেদের পরিচয় একে অপরের থেকে গোপন রাখতেই ছিল পুরনো দিনের অভিনব এই ছক। পাশাপাশি নয়া পদ্ধতি মেনে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে চলত টাকার লেনদেন।
তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে বিদেশের মাটিতে বসে এই গোটা বিষয়টি পরিচালনা করত বীরেন্দ্র বসোয়া নামে এর এক অভিযুক্ত। এনক্রিপ্টেড পেইড অ্যাপ ব্যবহার করে এর সঙ্গে যোগাযোগ করত তুষার। এই ব্যক্তি ছিল এই চক্রের অন্যতম অপারেটর। দিল্লি-এনসিআর-এ কোকেনের দুটি চালান পেয়েছিল এই অভিযুক্ত। মহিপালপুরের একটি গুদামে লুকিয়ে রেখেছিল বিপুল পরিমাণ মাদক। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, জিমি নামে এই বিদেশি ভারতে ৫৬০ গ্রাম কোকেন পাচার করে। ২০৪ গ্রাম কোকেন দিল্লির রমেশ নগরে নিয়ে আসে ইংল্যান্ডের বাসিন্দা আর এক অভিযুক্ত। যদিও বর্তমানে ওই ব্যক্তি পলাতক। এই মাদক কারবারে যুক্ত ভারতীয় ও বিদেশি প্রত্যকের সন্ধানে একাধিক রাজ্যে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। দেশের নানা প্রান্তে রেভ পার্টিগুলিতে এই মাদক ছড়ানো পরিকল্পনা ছিল অভিযুক্তদের।