শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: টোটোয় চেপে দিনভর টোটো কোম্পানি। অবশেষে এই আপ্তবাক্যই সত্যি হল ই-রিকশা ও টোটোর ক্ষেত্রে। যাত্রী তোলা বা নামানোর কোনও তাড়া নেই। ঘড়ি ধরে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে বেড়ালেই হল। মিলে যাচ্ছে কড়কড়ে হাজার টাকা। চাপমুক্ত এমন কাজে খুশি জলপাইগুড়ির টোটো চালকরা। সৌজন্যে লোকসভা নির্বাচন। ভোটের জন্য এখন আর ভাড়ায় টান নেই। শহরের একটা বড় অংশের টোটোই এখন লেগে পড়েছে ভোটের কাজে। বিভিন্ন রাজনীতি দলের মাইক টোটোর মাথায় করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মাঠে ঘাটে, শহরের রাস্তায়। নেতানেত্রীর রেকর্ড করা বক্তব্য পৌঁছে দিচ্ছেন জনতার দরবারে। কাজটাকে বেশ ভালোই উপভোগ করছেন টোটো চালকরা।
মধু দাস নামে এক টোটোচালক জানান, আগে ভাড়ার জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হত। কখন যাত্রী এসে টোটোয় উঠবে তার জন্য এই গলি ওই গলি উঁকি ঝুঁকি মারতেন। এখন আর সেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। রাজনৈতিক দলের দাদারা এসে বলে দিচ্ছেন, কাল কোথা থেকে কোথায় যেতে হবে। মাইক, ফেস্টুন বেঁধে বেরিয়ে পড়লেই হল। দিন শেষে মিলে যাচ্ছে ৫০০ বা ১০০০ টাকা। একবেলা হলে পাঁচশো আর সারাদিন হলে হাজার টাকা। সঙ্গে খাবারের পয়সা। শুধু মাইক বেঁধে প্রচারেই নয়। মিছিলেও এখন ডাক পড়ছে টোটো রিকশার। একসঙ্গে অনেকগুলো টোটোর মিছিল নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। মধু বিশ্বাস নামে এক টোটো চালক জানান, আমরা রাজনীতির রং দেখি না। যে দলই ডাকে তাদের হয়ে মাইক-পোস্টার বেঁধে রাস্তায় নেমে পরি। কারণ দিনের শেষে রোজগার হওয়া দিয়ে কথা। রাজা কর্মকার নামে আরেক টোটো চালক জানান, এক সময় ভোট প্রচারে সাইকেল মিছিল দেখা যেত।
[আরও পড়ুন: নির্বাচনী আবহে অভিষেকের হেলিকপ্টার থামিয়ে আয়কর তল্লাশি! কী মিলল?]
এখন নতুন সংযোজন টোটোর মিছিল। ফলে এখন রাস্তায় নামলে রোজগার নিয়ে আর চিন্তা করতে হয় না। টোটো চালকদের একটা অংশ রাজনৈতিক দলের প্রচারে ব্যস্ত থাকায় বাকিরা সাধারণ যাত্রী তুলেই ভালো রোজগার করে নিচ্ছেন। ১৯ এপ্রিল ভোটের দিন পর্যন্ত অবস্থার কোনও পরিবর্তন হবে না বলেই মনে করছেন আই এনটিটিইউসির ই-রিকশা চালক সংগঠনের সভাপতি পুণ্যব্রত মিত্র। দশ হাজারের বেশি ই-রিকশা, টোটো চলাচল করে জলপাইগুড়ি শহর ও শহরতলির রাস্তায়। তিনি জানান, এরমধ্যে এখন হাজারের বেশি টোটো চালক ভোট প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন। ভোটের দিনেও ভোটারদের আনা নেওয়ার আগাম ভাড়া ধরে রেখেছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে ভোটকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীলাভে খুশি সকলেই।