সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাম্পি। ছোট হলেও দক্ষিণ কর্নাটকের এই গ্রামের বড় নাম-ডাক রয়েছে। ইতিমধ্যেই বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী জায়গাগুলির মধ্যে স্থান করে নিয়েছে হাম্পি। তাই দক্ষিণ ভারত ঘোরার পরিকল্পনা করলে হাম্পি মিস করবেন না। চলুন দেখে নেওয়া যাক, হাম্পির দর্শনীয় স্থানগুলি।
প্রত্নতাত্বিক জাদুঘর
হাম্পির অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। প্রাচীন মূল্যবান পাথর ও অসাধারণ ভাস্কর্য, বিভিন্ন দেব-দেবতার মূর্তি সাজানো রয়েছে এই জাদুঘরে। এর মধ্যে বেশিরভাগ জিনিসই ব্রিটিশ আমলে তৈরি। সেই যুগে ব্রিটিশরা বেশ কিছু জিনিস বানিয়ে হাতির আস্তাবলে রেখে দিতেন। সেগুলিই একত্রিত করে ১৯৭২ সালে এই জাদুঘরটি বানায় আর্কিওললিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া।
হনুমান মন্দির
হাম্পি থেকে চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই হনুমান মন্দিরে জীবন্ত হয়ে ওঠে রামায়ণের কাহিনী। অঞ্জনাদ্রি পাহাড়ের উপর তৈরি মন্দিরটিতে ভগবান রাম ও সীতার পুজো করা হয়। মন্দিরের চূড়া থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য মন ভরিয়ে দেবে।
বিজয় ভিট্টালা মন্দির
খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ শতকে তৈরি মন্দিরটি এর ভাস্কর্যের জন্য বিশ্বখ্যাত। এই প্রসিদ্ধ মন্দিরটিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে আরও নানা মন্দির ও হলঘর। এখানের আরাধ্যা দেবতা ভিট্টালা। স্থানীয়রা বলেন, ভিট্টালা একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই জন্মে দেবতা হয়ে উঠেছিলেন। পশুপালকরাই মূলত তাঁর পুজো করে থাকেন। মন্দির চত্বরে পাথরের বৃহদাকার রথটির পাশে দাঁড়িয়ে পর্যটকরা ছবি তুলতে দারুণ ভালবাসেন।
বীরুপাক্ষ মন্দির
বিজয়নগরের শাসকদের আরাধ্য দেবতা ছিলেন বীরুপাক্ষ। হাম্পির এই মন্দির তাঁকে উৎসর্গ করেই তৈরি করা হয়েছিল। মূলত এই মন্দিরের টানেই পর্যটকরা হাম্পি ঘুরতে আসেন। প্রায় সারা বছরই এখানে ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। এই মন্দিরের গায়ের কারুকার্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।
হাম্পি বাজার
বীরুপাক্ষ মন্দিরের সামনে প্রায় এক কিলোমিটার বিস্তৃত এই বাজার। এটি বেশ প্রাচীন একটি বাজার। এখানেই বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন নার্সারি স্কুলটি অবস্থিত। প্রতি বছর এখানকার হাম্পি উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের সমাগম ঘটে।
রানির স্নানাগার
কর্নাটকের দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে যদি হাম্পিতে ঢোকেন, তাহলে সবার আগে চোখে পড়বে রানির স্নানাগারের ধ্বংসাবশেষ। চারদিক ঘেরা বিরাট এই স্নানাগারে রাজ পরিবারের মহিলারা স্নান করতে আসতেন। কথিত আছে, প্রাচীন যুগে স্নানাগারের জলাধারটি ফুল দিয়ে সাজানো থাকত। যদিও এখন সেসব কিছুই নেই। স্নানাগারের বাইরে একটি ছোট ফুলের বাগান রয়েছে। চড়ুইভাতির জন্য বাগানটি বেশ জনপ্রিয়।
হেমাকুটা পাহাড়ি মন্দির
এই মন্দিরে না এলে কিন্তু হাম্পির সৌন্দর্যের অনেকটাই অদেখা থেকে যাবে। এখানের বেশিরভাগ মন্দিরের আরাধ্য দেবতা হলেন শিব। প্রতিটি মন্দিরের গায়ের অসাধারণ শৈল্পিক নিদর্শন চোখে পড়বে।
কীভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে বিমানে বা ট্রেনে বেঙ্গালুরু। সেখান থেকে গাড়ি করে হাম্পি যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
হাম্পিতে থাকার জন্য অনেক ছোট বড় হোটেল ও গেস্টহাউস রয়েছে।
The post ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অপরূপ মেলবন্ধন যেখানে appeared first on Sangbad Pratidin.