সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দোল-হোলিতে পর্যটকের ঠাসা ভিড় পুরুলিয়ায়। আর তার মধ্যেই পুরুলিয়া জুড়ে চোখ রাঙাচ্ছে ৪৫টি হাতি। আর এতেই বাধ সেধেছে বসন্তের আনন্দ। শৌচকর্ম করতে গিয়ে দল থেকে বেরিয়ে আসা একটি দাঁতালের মুখোমুখি পড়ে মৃত্যু হল এক তরুণীর। রবিবার ভোর রাতে পুরুলিয়া বনবিভাগের কোটশিলা বনাঞ্চলের সিমনি বিটের কুমারডি গ্রামে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
মৃতের নাম মমতা কুমার (২৯)। তার বাড়ি পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার কুমারডিতেই। এদিন ভোর ৪টে ২০ নাগাদ ওই তরুণী শৌচকর্ম করতে গিয়ে বুনো দাঁতালের মুখোমুখি পড়েন। ওই এলাকায় যেহেতু ২৫-৩০ টি হাতি রয়েছে তাই শনিবার রাতেও জঙ্গল এলাকায় নজরদারি চলছিল বনকর্মীদের। ভোররাতের এই ঘটনার খবর পেয়ে তারা তরুণীকে উদ্ধার করে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর মাথায় আঘাত ছিল। পুরুলিয়া বন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “একটি ঘটনা ঘটে গিয়েছে। আমরা সতর্ক রয়েছি। নজরদারি চলছে। ঘন জঙ্গলে মানুষজন যাতে না যান তার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। সরকারি আইন মেনে মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে।”
[আরও পড়ুন: গাড়ির ভিতর লক্ষ-লক্ষ টাকা, ভোটের মুখে বিপুল নগদ উদ্ধার কোলাঘাটে]
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫-৩০ টি হাতির দল কোটশিলা বনাঞ্চলের জাবর সিমনি, মারামু, বাঁশগড় এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এই দল হাতিটি মাঝে মধ্যে ঝালদার কলমা বিট হয়ে ঝাড়খন্ডেও চলে যাচ্ছে। এই দল হাতির একটি দাঁতালের মুখোমুখি পড়েই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। ওই দল হাতি শনিবার রাতে বেশ কিছু সবজির জমি ক্ষতি করে। কাঁচা বাড়ির একাংশ ভেঙে দেয়। দুমড়ে-মুচড়ে দেয় একটি সাইকেল।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অযোধ্যা ও মাঠা বনাঞ্চলেই ১২-১৪ টি হাতি আছে। দোলে এই এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি পর্যটক রয়েছেন। ফলে সাবধানতা অবলম্বন করার কথা বলেছে বনদপ্তর। এছাড়া বলরামপুর বনাঞ্চলেও একটি হাতি আছে। এই সময় পর্যটকরা পলাশ দেখতে একেবারে জঙ্গলের ভিতরে চলে যান। এই পর্যটনের মরশুমে বুনো হাতি থাকায় জঙ্গলের প্রবেশ পথে অযোধ্যা পাহাড়তলি এলাকায় টহল শুরু করেছেন বনকর্মীরা।