স্টাফ রিপোর্টার: ‘আমি ফিরে আসতে চাই এই ডাফরিন রোডে। এই রাস্তায় দাঁড়িয়েই আমি ডিউটি করব। এটাই আমার চ্যালেঞ্জ।’
৬ মাসের লড়াইয়ে জিতলেন কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট সুদীপ রায়। গত জুন মাসে এই ডাফরিন রোডে ডিউটি করতে গিয়েই পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি। অস্ত্রোপচার করে কোমরের নিচ থেকে ওই ট্রাফিক সার্জেন্টের ডান পা বাদ দিতে হয়েছিল। কিন্তু, কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি সুদীপ। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছেন। অসম্ভব মনের জোর আর কৃত্রিম পায়ের ভর করে ফের হাঁটতে শুরু করেছেন কলকাতা পুলিশের এই ট্রাফিক সার্জেন্ট। আর হাঁটতে যখন পারছেন, তখন বাইকই বা চালাতে পারবেন না কেন? ইউনিফর্ম আর হেলমেট চাপিয়ে বাইকে বেহালার পুলিশ আবাসনের ভিতরে ঘুরেও এলেন এক পাক। সাধারণ আর পাঁচজনে সঙ্গে তাঁর চলাফেরার কোনও তফাতই নেই। সেই দৃশ্য দেখে আনন্দিত তাঁর পরিবারের লোকেরাও।সোশ্যাল মিডিয়ায় সুদীপের বাইক চালানোর ভিডিও দেখে খুশি সহকর্মীরাও। ট্রাফিক সার্জেন্ট সুদীপ রায় জানান, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই ফের শহরের রাজপথে ডিউটিতে যোগ দিতে চান।
[নাছোড় বৃষ্টি চলবে রবিবারও, তবে শক্তি হারাবে নিম্নচাপ]
গত ৭ জুন ডাফরিন রোডে ডিউটি করছিলেন সাউথ ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সুদীপ রায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মিনিবাস ধাক্কা দেয় তাঁকে। ডান পায়ের উপর দিয়ে চলে যায় বাসের চাকা। রক্তাক্ত অবস্থায় ভরতি করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, ‘পেলভিস জয়েন্ট’—এ একাধিক হাড় ভেঙেছিল। হাঁটুর উপরের হাড়ও টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। পরপর দু’টি অস্ত্রোপচারের পরও সুদীপের ডান পা কেটে বাদ দিতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। চার মাস শয্যাশায়ী ছিলেন সুদীপ। কিন্তু হারাননি মনের জোর। এদিন সুদীপ জানান, সারাক্ষণই তিনি ভাবতেন যে করেই হোক তাঁকে ফের রাস্তায় ডিউটি করতে হবে। ভাইয়ের পাশে দাঁড়ান দাদা মলয় রায়। তিনিও পেশায় ট্রাফিক পুলিশের কর্মী। পূর্ব যাদবপুর ট্রাফিক গার্ডের অতিরিক্ত ওসি পদে কর্মরত। নেট দেখে ‘প্রসথেটিক লেগ’ বা কৃত্রিম পা জোগাড় করার ব্যবস্থা করেন মলয়। চিকিৎসকদের পরামর্শমতো ব্যায়াম করতেও শুরু করেন সুদীপ। কৃত্রিম পায়ের সাহায্যে শুরু করেন হাঁটা। শেষেপর্যন্ত রাস্তায় ফেরার লড়াইয়ে জয়ী হলেন সুদীপ। অসম্ভব মনের জোরে হাঁটতে , সিঁড়ি ভাঙতে, এমনকী বাইক চালাতেও পারছেন তিনি। সুদীপ জানিয়েছেন, তাঁর এই লড়াইয়ে সারাক্ষণ পাশে রয়েছে কলকাতা পুলিশ। যে কোনও রকমের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন উর্ধ্বতন আধিকারিক ও সহকর্মীরা। পরিবারের লোকেরা সারাক্ষণ তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন। কৃত্রিম পা নিয়ে প্রথমে অবশ্য বাইক চালাতে একটু অসুবিধা হত। তবে এখন আর কোনও সমস্যা নেই। মাস দেড়েকের মধ্যে তিনি আরও ভাল করে বাইক চালাতে পারবেন বলে আশাবাদী সুদীপ। ডাফরিন রোডই তাঁর চ্যালেঞ্জ। কৃত্রিম পা নিয়ে ওখানেই ডিউটি করতে চান সুদীপ রায়।
[দুই নাবালিকাকে পর্ন ভিডিও দেখানোয় যুবককে নগ্ন করে পেটাল জনতা]
The post কৃত্রিম পায়ে ভর করেই রাজপথে ফেরার স্বপ্ন ট্রাফিক সার্জেন্ট সুদীপের appeared first on Sangbad Pratidin.