সুব্রত বিশ্বাস: দক্ষিণ–পূর্ব রেলের শালিমার কোচিং টার্মিনালে একাধিক উন্নয়মূলক কাজ হচ্ছে। এই কারণে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি শালিমার–সাঁতরাগাছির মধ্যে ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে রেল। ফলে বাতিল হচ্ছে বহু ট্রেন। সময় পরিবর্তন হয়েছে বেশ কয়েকটি ট্রেনের। সবমিলিয়ে শনিবার সমস্যায় পড়তে পারেন ওই রুটের নিত্যযাত্রীরা।
শনিবার হাওড়া–ভুবনেশ্বর, হাওড়া–পুরুলিয়া ও হাওড়া–দিঘা স্পেশ্যাল ট্রেন বাতিল হয়েছে। পাশাপাশি, ৩৪টি আপ ও ৩৩টি ডাউন লোকাল বাতিল করেছে রেলের শাখা। সময়ে পরিবর্তন হয়েছে আপ যশবন্তপুর, আপ এরনাকুলাম স্পেশ্যালের ও ডাউন মুম্বই ও আহমেদাবাদ এক্সপ্রেসের। রেল সূত্রে খবর হাওড়া–ভদ্রক স্পেশ্যাল ছাড়বে খড়গপুর থেকে ও হাওড়া–রাঁচি স্পেশ্যাল ছাড়বে টাটা থেকে। এছাড়া পাঁচটি ইএমইউ হাওড়ার পরিবর্তে বাউড়িয়া থেকে ছাড়বে।
[আরও পড়ুন : নির্বাচনের আগে ফের রাজ্য থেকে উদ্ধার আধপোড়া নোট, তুঙ্গে জল্পনা]
শালিমার স্টেশনের উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। হাওড়ার চাপ কমাতে এই স্টেশন থেকে বেশকিছু দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা করা হচ্ছে যাতে আগামী দিনে শালিমার থেকে অসংখ্য ট্রেন চলাচল করে। এজন্য সাঁকরাইল থেকে শালিমারের মাঝে ৮.৭ কিলোমিটার নতুন লাইন হবে। সাঁকরাইল–আন্দুলের মাঝে ৬৩ মিটার উড়ালপুল তৈরি হবে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নানা উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। ফলে ওইদিন এই শাখায় ট্রেন নিয়ন্ত্রণ বলে জানিয়েছে ওই রেল।
এদিকে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই সরকার ও বিরোধীদের চাপানউতোর বাড়ছে। এরই মধ্যে কেন্দ্র সরকার যে বেকারত্ব ঘোচাতে ব্যর্থ, তা প্রমাণ করতে চাইছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের প্রশ্নের জবাবে গত ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের শূন্যপদের সংখ্যা ও নন গেজেটেড পদে নিয়োগের প্যানেলের তথ্য দিয়েছে রেল। রাজ্যের পূর্ব, দক্ষিণ–পূর্ব ও মেট্রো রেলের শূন্যপদের সংখ্যা ও নিয়োগ একেবারে ‘হতাশাজনক’ বলে জানিয়েছেন শান্তনু সেন। তিনি বলেন, “এই তথ্যই কেন্দ্র সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ করে।”
[আরও পড়ুন : ‘সিবিআই লেলিয়ে লাভ নেই, আমার দ্বিগুণ জেদ’, রুজিরাকে জেরা নিয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি অভিষেকের]
গত ২০১৬ সালে ভারতীয় রেলের সতেরোটি জোনে শূন্যপদ ছিল ২,১৭,৩৬৯টি। যার মধ্যে পূর্ব রেলে শূন্যপদ ছিল ২২,০৬৬ টি, দক্ষিণ–পূর্ব রেলে ১৬,২৩৫টি ও মেট্রো রেলে ৮০১টি। ২০১৬–১৭ বর্ষে নিয়োগের যে প্যানেলের তথ্য দিয়েছে রেল তাতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় রেলে নিয়োগ হয়েছে ২৫,৭৪০ জন। যার মধ্যে পূর্ব ও মেট্রো রেলের সংখ্যা ৩,২৫৪ ও দক্ষিণ পূর্ব রেলে ১,৪১৩। পরবর্তী বছরগুলিতে ক্রমান্বয়ে এমনই হতাশাজনক তথ্য দিয়েছে রেল বলে তৃণমূলের পক্ষে দাবি।
পাঁচ বছরে সংখ্যাটা বেড়েছে বেশ খানিকটা। ২০২০ সালে ভারতীয় রেলে মোট শূন্যপদের সংখ্যা ২,৭৮,২০৬টি। যার মধ্যে পূর্ব রেলে ২৫,৫৪৮টি, দক্ষিণ পূর্বে ১৬,৮৩৫টি ও মেট্রো রেল ৯৯৮টি। গত ২০১৯–’২০ সালে নিয়োগের প্যানেলে সতেরোটি জোনে নন গেজেটেডে নিয়োগ ১,২১,৫৩৯ জনের। যার মধ্যে পূর্ব ও মেট্রোতে মোট নিয়োগ ৩,২৫৪ জন, দক্ষিণ পূর্বে ৭,১২২ জন। তৃণমূলের অভিযোগ, “কুড়ি শতাংশও পদেও নিয়োগ করতে পারেনি রাজ্যের অভ্যন্তরীণ রেল জোনে। এটা কেন্দ্রের চূড়ান্ত ব্যর্থতার প্রমাণ।”