নব্যেন্দু হাজরা: কিছুদিন আগে ডিএন ৪৪ বাসে উঠেছিলেন এক মহিলা। কিন্তু গোটা বাসে চোখ বুলিয়েও লেডিজ সিট কোথায় রয়েছে, তা খুঁজে পাননি। কন্ডাক্টরও জানান, মহিলাদের জন্য আলাদা কোনও সিট সংরক্ষিত নেই। কিন্তু কেন নেই! মহিলা যাত্রীর এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য কন্ডাক্টর দিতে পারেননি। অগত্যা ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। বিষয়টি নিয়ে পরিবহণ দপ্তরের কাছে অভিযোগ জানান ওই মহিলা।
এর পরই পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা খোঁজ নিয়ে দেখেন, শহর, জেলা, মফস্বল-সহ গোটা রাজ্যেই চলা বহু সরকারি-বেসরকারি বাসেই মহিলাদের জন্য কোনও সিট সংরক্ষিত নেই। সব সিটই রয়েছে সর্বসাধারণের জন্য। ফলে সেখানে অফিস টাইমে ভিড় বাসেও মহিলাদের গুঁতো খেয়েই গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। আর তার পরই সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত সরকারি-বেসরকারি বাসে মহিলা সিট সংরক্ষিত করতে হবে। তবে মোট সিটের কত শতাংশ সিট রাখা হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বেসরকারি বাস সংগঠনগুলোকেও মহিলা যাত্রীদের সিট সংরক্ষণের সংখ্যা নির্দিষ্ট অনুপাতে বেঁধে দেবে পরিবহণ দপ্তর। পাশাপাশি সরকারি বাসেও তা রাখা হবে।
[আরও পড়ুন: সায়ন-সুজনের নাম করে ‘বদলা’র হুমকি, লাভলি মৈত্রকে সতর্ক করল দল]
পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের তরফেও সমস্ত বাসে মহিলা যাত্রীদের জন্য সিট রাখার কথা বলা হয়েছে। শহর-শহরতলিতে চলা প্রায় ৫০ শতাংশ বাসে মহিলাদের জন্য সিটের বিশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ৫০ শতাংশে নেই। এই অংশটাকেই আনা হবে নয়া নিয়মের আওতায়। দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আগে জানতাম সব বাসেই হয়তো মহিলাদের সিট রয়েছে। কিন্তু এখন অভিযানে নেমে দেখা গেল, বহু বেসরকারি বাসেই তা নেই। শুধু বেসরকারি কেন, বহু সরকারি গাড়িতেই মহিলাদের জন্য সিট সংরক্ষণ নেই। তাই এবার এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ট্রেনে লেডিজ কামরা আলাদা আছে। মেট্রোতেও প্রত্যেক কামরায় রয়েছে। ফলে বাসই-বা আলাদা হবে কেন!’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মহিলা যাত্রীদের জন্য বিশেষ লেডিজ স্পেশাল বাস চালু হয়েছে। রোজ হাজার হাজার মহিলা কর্মস্থলে যাতায়াত করেন বাসে চেপে। অফিসটাইমে ব্যাপক ভিড় হয়। সেই ভিড়ের চাপে মহিলাদের যাতায়াতে সমস্যা হয়। তাঁদের জন্য সিট সংরক্ষিত থাকলে সুবিধা হবে যাতায়াত করতে। সেকথা মাথায় রেখেই নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করা যেতে পারে বলে খবর। সারা বাংলা বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক বাসেই নির্দিষ্ট আসন মহিলাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। কিছু বাসে নেই। সরকার নির্দেশ দিলে তা তো করতেই হবে। তবে দূরপাল্লার বাসে অনলাইনে যে সিট বুক হয়, সেখানে লেডিজ সিট বুক না হলে তা জেনারেল করে দিলে ভালো হয়।’’