শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: পুজোর ছুটিতে জঙ্গলে বেড়াতে (Durga Puja Travel) যাওয়ার পরিকল্পনা? কিন্তু আবার ভাবছেন জঙ্গল সাফারিতে গেলে শারদ আবহটা ঠিক উপভোগ করা যাবে না? এবার সেসব চিন্তা একেবারেল ঝেড়ে ফেলুন। পুজোর ছুটিতে আপনাকে দু'হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানাচ্ছে গরুমারা জাতীয় উদ্যান। পুজোর স্বাদ - অঞ্জলি, ভোগ, নাচগান, আনন্দ। পুজোর চারদিন যাঁরা ঘর ছেড়ে বন্যপ্রাণী দর্শনের আশায় জঙ্গলে বেড়াতে আসছেন, পর্যটকদের প্রতিমা দর্শন এবং পুজো দেওয়া - দুই আক্ষেপ এবার একসঙ্গে মিটিয়ে দিতে চলেছেন গরুমারা জাতীয় উদ্যানের পুজো উদ্যোক্তারা।
জঙ্গলের নিবিড় পরিবেশে শারদ আনন্দ। নিজস্ব ছবি।
মূলত বনবস্তির বাসিন্দাদের পুজো নামেই পরিচিত গরুমারার বিচা ভাঙার দুর্গাপুজো। আয়োজনের পুরোভাগে থাকেন বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা। এই বছর একুশ তম বর্ষে পা দিল গরুমারার পুজো। তিনমাস টানা বন্ধ থাকার পর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে যাচ্ছে গরুমারার জঙ্গল। পুজোর হাতেগোনা আর কয়েকদিন। তাই পুজোর ফর্দ ইতিমধ্যেই সাজিয়ে ফেলেছেন পুজোর দায়িত্বে থাকা চাটুয়া, বিচাভঙা, কালীপুর, বুধুরাম বনবস্তির বাসিন্দারা। এরই মধ্যে দল বেঁধে জলপাইগুড়ি এসে পছন্দের প্রতিমা বায়না দিয়ে গেছেন। ষষ্ঠীর রাতে প্রতিমা আসবে গরুমারায়। লাটাগুড়ি বাজার থেকে মাদল বাজিয়ে প্রতিমা আনা হবে মণ্ডপে। খোঁপায় ফুল, লালপাড় শাড়ি পরে দুর্গা বন্দনায় নৃত্য করবেন বনবাসী রমণীরা। তার জন্য নিয়ম করে মহড়াও দিয়ে চলেছেন তাঁরা।
গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাজীব দে জানান, কাছেপিঠে পুজো না থাকায় পুজোর চারদিন প্রতিমা দর্শনের জন্য মন উতলা হয়ে থাকত বন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের। রাতে পথে বন্যপ্রাণীর ভয়, তাই সকাল সকাল দূরে কোথাও গিয়ে প্রতিমা দর্শন করে আসতে হতো তাঁদের। মন খুলে নিজেদের মতো করে পুজো (Durga Puja 2025) উপভোগ করতে পারতেন না। সেই আক্ষেপ দূর করতেই গরুমারায় এই পুজোর আয়োজন।
গরুমারার জঙ্গলের পরিচিত গুচিয়া পাতায় পরিবেশন করা হবে ভোগের প্রসাদ। নিজস্ব ছবি।
গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের দক্ষিণ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস জানান, এই পুজোর পুরো দায়িত্বেই রয়েছেন বনবাসীরা। এটা বনবাসীদেরই পুজো। সহযোগিতা করে বনদপ্তর। পুজোয় বন ঘুরতে আসা পর্যটকরাও আসেন। এবারও তাঁদের জন্য অঞ্জলির ব্যবস্থা থাকছে। থাকছে খিচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা। কলাপাতার মতো দেখতে গরুমারার জঙ্গলের পরিচিত গুচিয়া পাতাতেই পরিবেশন করা হবে ভোগের প্রসাদ। সন্ধ্যায় মণ্ডপে বসবে আদিবাসী নাচগানের আসর। ইচ্ছে করলে নাচের ছন্দে পা মেলাতে পারবেন পর্যটকরাও।
